অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে যেসকল পার্থক্য

আমরা অনেকেই আছি যারা অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্য সঠিকভাবে জানিনা। অনেকেই অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্য কে  শুধু নাম এর পার্থক্য মনে করে। এবং অনার্সের কোর্স চার বছর এবং ডিগ্রীর কোর্স তিন বছরের এইটুকুই জানি।যারা মূলত অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে পার্থক্য ভালোভাবে জানেন  হয়তো আপনারা ভাবতে পারেন এটা কি রকম পোস্ট।
কিন্তু আসলে এমন অনেকেই আছেন যারা অনার্স এবং ডিগ্রির ভেতরের সত্যিকার অর্থে পার্থক্যটা ভালোভাবে এবং সুস্পষ্ট ভাবে জানেন না। তাই তাদের জন্য আজ আমাদের এই পোস্টটি।আসুন জেনে নেই ডিগ্রি এবং অনার্সের পার্থক্য! 


মূলত যারা ইন্টার শেষ করেছেন এখন অনার্স অথবা ডিগ্রিতে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের জন্য এই পোস্টটি দারুন ভাবে কার্যকর হবে। কারণ পোস্ট টি থেকে আপনি জানতে পারবেন অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যকার পার্থক্য। 

 অনার্স  শব্দের অর্থ হচ্ছে সম্মান। যদি আপনি অনার্সে অধ্যায়নরত অবস্থা থাকেন তাহলে  আপনি একজন সম্মান শ্রেণীর ছাত্র।  অনার্স হচ্ছে স্নাতক সম্মান।এবং ডিগ্রী হচ্ছে শুধুমাত্র স্নাতক।তবে অনার্স বা ডিগ্রি দুটিই নিয়ন্ত্রন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।একজন ছাত্র হিসেবে ডিগ্রি এবং অনার্স এর পার্থক্য জানা অত্যন্ত জরুরি।
 অনার্সে মূলত কোন বিষয়ের উপর খুঁটিনাটির সম্পূর্ণ ভাবে পড়ানো হয়।কিন্তু ডিগ্রীর ক্ষেত্রে তা নয়।ডিগ্রির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোন বিষয়ের উপর কিছু কিছু অধ্যায় অাংশিক ভাবে পড়ানো হয়। আর এ কারণেই অনার্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের তুলনায় অধিক জ্ঞান সম্পন্ন হয়।অনেকেই প্রশ্ন করেন ডিগ্রি কোন কোন বিষয় আছে আসলে অনার্স এবং ডিগ্রির সকল সাবজেক্টই মিল আছে।চাকরির ক্ষেত্রেও অনার্স এবং ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান।ডিগ্রি এবং অনার্স  শিক্ষার্থীরা চাকরি নিয়োগ  এর ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনার্সের শিক্ষার্থীরা অধিক মূল্যায়ন পেয়ে থাকে।
ডিগ্রির পর মাস্টার্স করার ক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা রয়েছে তেমনি সুবিধাও আছে। অনার্স এর পরে মাস্টার্স এর কোর্স করতে সময় নেয় এক বছর।কিন্তু ডিগ্রির পর মাস্টার্স করতে সময় লাগে দুই বছর।এছাড়া বিভিন্ন সরকারি চাকরির বিয়োগের  ক্ষেত্রে ডিগ্রি এর পরে মাস্টার্স কমপ্লিট না করলে কোন সুফল পাওয়া যায় না। পক্ষান্তরে অনার্সের শিক্ষার্থীরা অনার্স কমপ্লিট করেই যে কোন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

একজন অনার্সের ছাত্র অনার্স শেষ করে বিসিএস এ অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু একজন ছাত্র ডিগ্রি শেষ করে বিসিএস এ অংশগ্রহণ করতে পারবে না।একজন ডিগ্রি থেকে বিসিএস অংশগ্রহণ করতে হলে অবশ্যই তাকে মাস্টার্স কমপ্লিট করতে হবে। তবে ডিগ্রি ছাত্ররা মাস্টার্স কমপ্লিট করার পরে তা অনার্স এবং ছাত্রদের  সার্টিফিকেটের মান সমান হয়। 
তবে তাই বলে ডিগ্রি ছাত্র দের কখনো ছোট করে দেখা উচিত নয়।কারণ অনেক ডিগ্রির ছাত্র আছে। যারা ডিগ্রি করে মাস্টার্স কমপ্লিট করে অনেক বড় বড় জব করছে। পক্ষান্তরে অনার্সের ছাত্ররা বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আমরা অনার্স এর সুবিধা গুলো তো জানলাম কিন্তু ডিগ্রিরও কিছু কিছু সুবিধা রয়েছে যেগুলো আমরা জেনে নেব।

অনার্সে পড়তে হলে অবশ্যই একজন নিয়মিত ছাত্র হতে হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশে অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা ইন্টার পাশের পরে বিভিন্ন চাকরিতে যোগ দেয় এবং তার  পাশাপাশি লেখাপড়া করে থাকে। তাদের জন্য ডিগ্রী বেস্ট সলিউশন। কারণ ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের অনার্স এর ছাত্রদের তুলনায় একটু কম পড়লেও চলে।
মাস্টার্স এর ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে অনার্স এর ক্ষেত্রে যে সাবজেক্ট দিবে তাই নিয়ে মাস্টার্স করতে হবে। কিন্তু ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের এখানে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয় তারা তাদের পাঠিত 3 সাবজেক্ট থেকে যে কোন একটির উপর মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পারবে। 

ডিগ্রির শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারিভাবে উপবৃত্তির ব্যবস্থা থাকলেও অনার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য কোন উপবৃত্তির ব্যবস্থা নেই। 
সিজিপিএ এবং ক্রেডিট সিস্টেম চালু হওয়ার কারণে ডিগ্রির মান আগের তুলনায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 
তবে সর্বোপরি কথা হচ্ছে এই যে, আপনি অনার্স করুন বা ডিগ্রী করুন প্রত্যেক ক্ষেত্রে আপনাকে পড়ালেখা করতে হবে। এবং পড়ালেখা করে ভালো স্থান অর্জন করতে পারলে কোনটার এই মান খারাপ নয়। দৃঢ় মনোবল নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে তাহলে সফলতা অর্জন করা সম্ভব হবে। ২০১২ সালে ডিগ্রী শেষে মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল একজন ডিগ্রী পড়ুয়া ছাত্র। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url