আসুন জানি ডার্ক ওয়েব ও ডীপ ওয়েব কি এবং এর মূল রহস্য
আমাদের সবাই ডার্ক ওয়েব এবং ডীপ ওয়েব কি এবং এর মূল রহস্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ রয়েছে। আর আমরা অনেকেই হয়তো নাম দুটি আগেই শুনেছি। আবার অনেক এখন পর্যন্ত এই নামের সাথেই পরিচিত নয়।
আমাদের পৃথিবী রহস্যময় সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ আমরা প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছি বিভিন্ন রহস্যের। এমন কিছু কিছু রহস্য আছে যেগুলো প্রাকৃতিক। আবার কিছু কিছু রহস্য আছে যেগুলো মানব সৃষ্ট। কিন্তু এর পরেও মানুষ এসকল রহস্য ভেদ করতে পারে না। সেই শুরু থেকেই এ সকল কিছু শুধুমাত্র রহস্যই রয়ে গিয়েছে আমাদের নিকট। আমাদের উন্নত বিজ্ঞান এ সকল রহস্য উন্মোচন করার জন্য বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। এই বিজ্ঞানের আবিষ্কারের মধ্যেও রয়েছে রহস্য। ইন্টারনেট হলো বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। আর আজ আমরা এই ইন্টারনেট জগতের এর এক রহস্য ডীপ ওয়েব! আর আমরা ডিপ ওয়ের এবং ডার্ক ওয়েব রহস্য সম্পর্কে জানব।
ইন্টারনেটের প্রকারভেদ |
আমরা সাধারণত যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি এটি সরফেস ওয়েবের অংশ। আমরা ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে যা বুঝি সেটি হলো সার্ফেস ওয়েব। সার্ফেস ওয়েবের অংশ হচ্ছে গুগল, উইকিপিডিয়া, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ইত্যাদি। মূলত আমরা যে সকল কিছু ইন্টারনেটের ব্যবহার করে থাকি তা। আমরা অনেকগুলো ওয়েবসাইটের নাম জানি আবার অনেক গুলো রয়েছে তার নাম জানিনা।
যে সকল ওয়েবসাইট আমাদের প্রয়োজন কিন্তু নাম জানিনা তা আমরা গুগলের সার্চ এর মাধ্যমে খুব সহজেই পেয়ে যাই এবং এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এবং যে কেউ ব্যবহার করতে পারি এই ইন্টারনেট। ভাবুনতো ইন্টারনেট জগতে কি নেই? আপনি যে বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন সেই বিষয়ে হাজার হাজার তথ্য এনে হাজির করা হচ্ছে আপনার সামনে।
কিন্তু আপনি জানেন কি আপনি এই যে চিন্তা করছেন ইন্টারনেট জগতে কি নেই! এটি সমগ্র ইন্টারনেট জগতের মাত্র ৫ শতাংশ। এর অর্থ হল আমরা সমগ্র ইন্টারনেট জগতের শুধু মাত্র 5% এক্সেস করতে পারি।
তাহলে বাকি ৯৫% কোথায়?
বাকি ৯৫% রয়েছে ডার্ক ওয়েব এবং ডিপ ওয়েবে। তবে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ওয়েব অ্যাক্সেস করা আপনার আমার মত সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এক্সেস করতে পারলেও ভিজিট করতে পারবে না সঠিক ভাবে। কারন ডার্ক ওয়েবর ওয়েবসাইট গুলো সহজ ভাবে ডিজাইন করা না যে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ওয়েবসাইট গুলো দেখতে পারবেন। এটি সম্পুর্ন গোলকধাঁধার মত করে তৈরি করা।
ডার্ক ওয়েব কি?
ডার্ক ওয়েব হচ্ছেন ইন্টারনেট জগতের অন্ধকার জায়গা যেখানে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারেনা। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে বিশেষ প্রযুক্তি এবং এ সম্পর্কে থাকতে হবে প্রচুর জ্ঞান। মূলত ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের গোপন জায়গা যেখানে ইন্টারনেটের বিভিন্ন গোপন তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।
web layer |
বাকি ৯৫% রয়েছে ডার্ক ওয়েব এবং ডিপ ওয়েবে। তবে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ওয়েব অ্যাক্সেস করা আপনার আমার মত সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এক্সেস করতে পারলেও ভিজিট করতে পারবে না সঠিক ভাবে। কারন ডার্ক ওয়েবর ওয়েবসাইট গুলো সহজ ভাবে ডিজাইন করা না যে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ওয়েবসাইট গুলো দেখতে পারবেন। এটি সম্পুর্ন গোলকধাঁধার মত করে তৈরি করা।
ডার্ক ওয়েব কি?
ডার্ক ওয়েব হচ্ছেন ইন্টারনেট জগতের অন্ধকার জায়গা যেখানে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারেনা। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে বিশেষ প্রযুক্তি এবং এ সম্পর্কে থাকতে হবে প্রচুর জ্ঞান। মূলত ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের গোপন জায়গা যেখানে ইন্টারনেটের বিভিন্ন গোপন তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমাজ বিরোধী ও অনৈতিক কাজ হয়ে থাকে এই ডার্কওয়েবে। যেমন বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবার, অনলাইনের মাধ্যমে খুনি ভাড়া করা, বিভিন্ন ধরনের ড্রাগ কেনাবেচা করা, এখানে অ্যাপল এবং স্যামসাং ব্র্যান্ডের পণ্য 80 পার্সেন্ট ছাড়ে বিক্রি করা হয়।
ডার্ক ওয়েব মূলত কিছু নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। যেমন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে টর নেটওয়ার্ক এবং আইটুপি। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার ফলে গ্রাহকদের কোন ঠিকানা ট্রাক করা সম্ভব হয়না।
Deep web |
ডার্ক ওয়েব এড্রেসগুলো হয় ভিন্নধর্মী যার কারণে ডার্কওয়েবের ওয়েবসাইটের এড্রেস গুলো কারো পক্ষে মনে রাখা সম্ভব হয়না। ডার্ক ওয়েবের ডোমেইন হচ্ছে .onion এবং ওয়েব এড্রেস গুলো হয়- fkvk68jjvknfj69vjbkmc.onion এই টাইপের। যার ফলে গ্রাহক মনে রাখতে পারে না যে সে কোন সাইট টি ভিজিট করেছে। শুধুমাত্র যারা তার সদ্ব্যবহার করে তারা এই সকল ওয়েব এড্রেস সেভ করে রাখার মাধ্যমে ব্যবহার করে।
ডার্ক ওয়েবের বিখ্যাত ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে হিডেনউইকি(HiddenWiki) সারফেস ওয়েবে আমরা যেমন গুগোল (Google) , বিং (bing), ইয়াহু (Yahoo) ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করি ঠিক তেমন করে ডার্ক ওয়েব ব্যবহারকারীগণ হিডেনউইকি সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে তথ্য সার্চ করে থাকে।
dark net web page |
তবে ডার্ক ওয়েব বিভিন্ন সাইট ভিজিট করা সারফেস ওয়েবের মতো সহজ নয়। ডার্ক ওয়েব চালানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই পারদর্শী হতে হবে না হলে আপনি কিছুই বুঝতে পারবেন না। ডার্ক ওয়েব সাইট গুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যার কারণে ব্যবহারকারী বুঝতে পারেনা সে কোন সময় কোন সাইট থেকে কোন সাইটে চলে যাচ্ছে।
ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং সফটওয়্যার, হ্যাকিং টিউটোরিয়াল, ক্লোন মাষ্টার কার্ড ইত্যাদি পেতে পারেন। এসকল টিউটোরিয়াল গুলো খুব বড় মানের হ্যাকারদের দ্বারা তৈরি যা আপনি সারফেস ওয়েবে খুঁজে পাবেন না। বিভিন্ন ধরনের মুভি,গান ইত্যাদি পাবেন ডার্কওয়েবে। এগুলো সারফেস ওয়েবে পাবলিশ করার অনেক আগেই ডার্কওয়েবে পাবলিশ হয়ে যায়।
ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং সফটওয়্যার, হ্যাকিং টিউটোরিয়াল, ক্লোন মাষ্টার কার্ড ইত্যাদি পেতে পারেন। এসকল টিউটোরিয়াল গুলো খুব বড় মানের হ্যাকারদের দ্বারা তৈরি যা আপনি সারফেস ওয়েবে খুঁজে পাবেন না। বিভিন্ন ধরনের মুভি,গান ইত্যাদি পাবেন ডার্কওয়েবে। এগুলো সারফেস ওয়েবে পাবলিশ করার অনেক আগেই ডার্কওয়েবে পাবলিশ হয়ে যায়।
এছাড়া ডার্কওয়েবে পাবেন আপনি বিভিন্ন ধরনের পর্ন, পেডোপিলিসদের (একজন ব্যক্তি যিনি শিশুদের প্রতি যৌন আকৃষ্ট হন) (২০১৪ সালে ডার্ক ওয়েবের সবচেয়ে অনুরোধ মুলক বিষয় ছিল শিশু পর্নোগ্রাফি) ইত্যাদি অসামাজিক কার্যকলাপের ভিডিও।
২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ি ডার্ক ওয়েবে যা আছে তা হলো-
বিভাগ-শতকরা হার
সহিংসতা-০.৩
অস্ত্র-০.৩
সামাজিক-১.২
হ্যাকিং-১.৪
অবৈধ পর্নোগ্রাফি-২.৩
যোগসূত্র-২.৩
চরমপন্থা-২.৭
অজানা-৩.০
অন্যান্য অবৈধ-৩.৮
ফাইন্যান্স-৬.৩
মাদক-৮.১
অন্যান্য-১৯.৬
কোনটি না-৪৭.৭
তথ্য সূত্র-উইকিপিডিয়া।
ডার্ক ওয়েবের বিখ্যাত ওয়েবসাইট সিল্ক রোড কিছুদিন আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানায় আমেরিকান সরকার। কিন্তু তারা এটি পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম হয়নি বরং তারা নতুন নামে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এটি ডার্ক নেটের সবচেয়ে বড় মার্কেট। এখানের পন্যের মুল্যের সাথে সারফেস ওয়েবের পন্যের মুল্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। সিল্ক রোডের পাশাপাশি ডায়াবোলাস ও একটি সাইট।
ডার্কনেটের সকল লেনদেন হয়ে থাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। কারন ক্রিপ্টো লেনদেনর মাধ্যমে দাতা এবং গ্রহীতার দুইজনেরই ঠিকানা এবং তথ্য গোপন থাকে।এসকল লেনদেন সম্পন্ন হয় সম্পুর্ন ভার্চুয়াল মাধ্যমে।
ডার্ক ওয়েবে হ্যাকার সার্ভিস পাওয়া যায়। এখানে অনেক হ্যাকার তাদের সেবা স্বতন্ত্রভাবে প্রদান করে। আবার অনেকে তাদের সেবা দলের একটি অংশ হিসেবে বিক্রি করে। এমন গ্রুপের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ হলো xDedic, hackforum, Trojanforge, Mazafaka, dark0de এবং TheRealDeal ডার্কনেট মার্কেট।
২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ি ডার্ক ওয়েবে যা আছে তা হলো-
বিভাগ-শতকরা হার
সহিংসতা-০.৩
অস্ত্র-০.৩
সামাজিক-১.২
হ্যাকিং-১.৪
অবৈধ পর্নোগ্রাফি-২.৩
যোগসূত্র-২.৩
চরমপন্থা-২.৭
অজানা-৩.০
অন্যান্য অবৈধ-৩.৮
ফাইন্যান্স-৬.৩
মাদক-৮.১
অন্যান্য-১৯.৬
কোনটি না-৪৭.৭
তথ্য সূত্র-উইকিপিডিয়া।
Silk road dark net market |
ডার্কনেটের সকল লেনদেন হয়ে থাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। কারন ক্রিপ্টো লেনদেনর মাধ্যমে দাতা এবং গ্রহীতার দুইজনেরই ঠিকানা এবং তথ্য গোপন থাকে।এসকল লেনদেন সম্পন্ন হয় সম্পুর্ন ভার্চুয়াল মাধ্যমে।
dark net hacker community |
কেউ কেউ আবার পেডোপিলিসদের ট্র্যাক এবং তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক অর্থ আদায় করার জন্য পরিচিত হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক সম্পর্কিত সাইবার অপরাধ এবং হ্যাকিং এর সেবাও ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যায়। আবার অনেকে ডার্ক ওয়েবে ক্লোন পেপাল, মাস্টার কার্ড ইত্যাদির সেবা প্রদান করে যার মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট হ্যাকের মত কর্মকান্ড সংগঠিত হয়ে থাকে।
তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ব্যাবহৃত প্রচারন মূলক কিউআর কোড! সোর্স-Wikipedia |
এর বাইরে ডার্ক ওয়েবে রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের আশ্চর্য কিছু। যা হয়তো আমাদের এখন পর্যন্ত অজানা। পরবর্তী পোস্টে আমরা আরও বিভিন্ন কিছু জানবো এই ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে।