বর্তমান সময়ে দেশে একাধিক মোবাইল ওয়ালেট সেবা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে বিকাশ। বর্তমানে অধিকাংশ লোক মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করে কারণ এটি একটি সুবিধাজনক লেনদেনের উপায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এটি একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করবে। কারণ দেশ ডিজিটাল করতে হলে দেশের লেনদেন ব্যবস্থাও ডিজিটাল করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে একাধিক ডিজিটাল ওয়ালেট রয়েছে যেমন বিকাশ,রকেট, আইপে, ইউপে,নগদ, মাইক্যাশ, ইউক্যাশ ইত্যাদি। তবে এসকল ওয়ালেটে শুধুমাত্র একই ওয়ালেট থেকে অন্য ওয়ালেটে লেনদেন করা যায়।যেমন বিকাশ থেকে বিকাশে,রকেট থেকে রকেটে, নগদ থেকে নগদে। আর এ কারণেই গ্রাহককে একাধিক ওয়ালেট ব্যবহার করতে হয় লেনদেনের সুবিধার্থে। যেটি মূলত একটি অসুবিধার কারণ হয়ে। এ কারণেই,'ইন্টার অপারেবল পেমেন্ট সলিউশন' চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
|
ইন্টার অপারেটর পেমেন্ট সলিউশন |
ইন্টার অপারেটর পেমেন্ট সলিউশন' বলতে বোঝানো হয়েছে এক মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে ওয়ালেটে লেনদেন করার সুবিধা তৈরি করা। অর্থাৎ আপনার যেকোনো একটি মোবাইল ওয়ালেট থাকলেই আপনি অন্যান্য সকল মোবাইল ওয়ালেট এর সাথে লেনদেন করতে পারবেন এর জন্য আপনাকে আলাদা আলাদা মোবাইল ওয়ালেট থাকতে হবে না। এর মাধ্যমে আপনি বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠাতে পারবেন। আবার রকেট থেকে নগদে টাকা পাঠাতে পারবেন। নগদ থেকে আইপেতে টাকা পাঠাতে পারবেন। অর্থাৎ একটি ওয়ালেট এর মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। এখন আর প্রতিটি ওয়ালেট এর সাথে লেনদেন করতে আলাদা আলাদা ওয়ালেট এর প্রয়োজন পড়বে না।
এ তথ্য জানায়,'ড্রাইভিং ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইনোভেশন ফর মিটিং এন্টারপ্রাইজ নিডস' শীর্ষক একটি সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আরেকটি প্লাটফর্মে আর্থিক লেনদেন বাস্তবায়নে 'ইন্টার অপারেবল পেমেন্ট সলিউশন'কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তারা।
|
ড্রাইভিং ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইনোভেশন ফর মিটিং এন্টারপ্রাইজ নিডস |
তিনি বলেন একটি দেশকে ডিজিটাল করতে প্রয়োজন তিনটি জিনিস, নাগরিকদের যাচাইকৃত পরিচয় তথ্য, ডিজিটাল প্রেমেন্ট প্লাটফর্ম এবং একটি প্লাটফর্মে সাথে আরেকটি প্লাটফর্মের অপারবেলিটি। তবে এর ভিতরের প্রথম দুইটি উপাদান আমাদের দেশে বর্তমানে রয়েছে তা হলো, দেশের নাগরিকের ডিজিটাল পরিচয় তথ্য এবং ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা। এখন কাজ শুরু তৃতীয়টির জন্য। জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন এ বছরের মধ্যেই ইন্টার অপারেবল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হবে বলে! এর ফলে এক মোবাইল ওয়ালেট থেকে অন্য মোবাইলে ওয়ালেটে লেনদেন করার সুবিধা পাবে ব্যবহারকারীগণ।
এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, আউটসোর্সিং এবং ডিজিটাল পণ্য ও সেবা থেকে দশ বছর আগেও আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু বর্তমান সরকারের দেশকে ডিজিটাল করার অঙ্গীকারের কারণে এটিকে ১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে। এবং আগামী চার বছরে তা ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
সেমিনারটিতে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হাসান। এছাড়াও সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফুড এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের টিম লিডার ম্যানগ্রোভ ফার্নহলজ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ট্রিনা ওভিয়েডো বক্তব্য রাখেন।