ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানি আমাদের দেশ যখন শাসন করেছে তারা বিভিন্ন স্থানে পিলার স্থাপন করে। বর্তমান সময়ে মানুষের মাঝে শোনা যায় যদি এই ম্যাগনেটি পিলার একটি পাওয়া যায় তাহলে নাকি চৌদ্দ গুষ্ঠি রাজার হালে কাটিয়ে দিতে পারবে।আপনি কত টাকা চান?৫ কোটি! ১০ কোটি! ৫০ কোটি! ১০০ কোটি! মোট কথা আপনার কাছে এর একটি পিলার থাকলে আপনাকে শুধু টাকা চাওয়ার সাহস অর্জন করতে হবে।
আপনি যদি কম চেয়ে ফেলেন তাহলে আপনারই লস কোটি কোটি টাকা। এত টাকা যা গুনতে আপনাকে আগে গোটা কয়েক টাকা গোনার মেশিন ক্রয় করতে হবে! তা না হলে আপনার গোষ্ঠির সব লোক মিলিয়েও টাকা গুনে শেষ করতে পারবে না! আপনার শুধু প্রয়োজন একটা পিলার ম্যানেজ করা। তাহলে দেরি কেন ভাই?চলুন আমরা সব কিছু বাদ দিয়ে পিলার খুজি!
|
ব্রিটিশদের সীমানা পিলার রহস্য |
হ্যা আপনি হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না কথা গুলো।কিন্তু এমনই গুজব রটেছিল আমাদের দেশে।তবে পিলার বিক্রি করে কোটিপতি হতে পেরেছেন এমন লোক আমি নিজে চোখে দেখি নাই। তবে অমুক এলাকার তমুক মিয়া তো পিলার বিক্রি করেই আজ কোটিপতি! আগে তো তার নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা! এখন গাড়ি,বাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স কোন কিছুর কমতি নেই! তবে আমার হয়তো কপাল খারাপ তাই তার দর্শন আজো পেলাম না!
তবে হ্যা, আমাদের চারপশে এমন অনেক আছে যারা মোটামুটি সাবলম্বী থেকে এখন পথের ফকীর! তবে এগুলো যানা যায় তাদের নিকট জনের কাছেই। বর্তমানে এসব ম্যাগনেটিক পিলারের সংখ্যা খুবই কম।নাই বললেই চলে। এর প্রধান কারন পিলার তো তুলে শেষ করে ফেলছি!
|
ম্যাগনেটিক পিলার। |
পিলারগুলো ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব মেপে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। সিমানা নির্ধারণ ও বজ্রপাত প্রতিরোধ করার জন্য। এটি পিতল, তামা, লোহা, টাইটেনিয়ামসহ ধাতব চুম্বক সমন্বয়ে গঠিত হওয়ার কারণে বজ্রপাত হওয়ার সময় ইলেকট্রিক চার্জ তৈরি হয়।তা সরাসরি এ পিলারগুলো টেনে নেয়া অর্থাৎ আর্থিংয়ের কাজ করত। এতে বজ্রপাত হতো এবং তা সরাসরি মাটিতে চলে যেত।যার কারনে মানুষ মারা যেত না।
রুটসের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে পিলার নিয়ে নানান রহস্যময় তথ্য। তারা বলেছেন, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাতে প্রাথমিকভাবে কিছু পিলার পাওয়া যায়। এ কারণে একে সীমান্ত পিলারও বলা শুরু হয় আর এর মধ্যে থাকা তামা, পিতল, টাইটেনিয়াম জাতীয় ধাতবের সমন্বয়ে তৈরি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী হওয়াতে একে মহামূল্যবান বলে অপপ্রচারের ফলে এসব পিলার চুরি হয়ে থাকে।
ব্রিটিশদের স্থাপন করা এ ধাতব পিলার নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে রহস্যের অন্ত নেই। পিলার আবিষ্কার করতে পারলে একজন মানুষ রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে।এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন জায়গায় মাটি খুঁড়ে পিলার তুলে ফেলার ঘটনা ঘটছে।কিছু কিছুু জায়গায় প্রভাবশালী ব্যক্তি ছাড়াও কিছু দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানও এ ‘ম্যাগনেটি পিলার’ উদ্ধার অভিযানে নেমে যায়।
|
Magnetic Pilar |
জানা যায়, এসব ধাতব পিলারের চৌম্বক শক্তি আছে। ফলে পিলারের আশপাশে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সিগন্যাল কাজ করে না। এখন সর্বত্র মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ায় খুব সহজেই পিলারের জায়গা চিহ্নিত করা যায়। ফলে চুরি করাও সহজ হয়ে যায়।তবে আগে পিলার চিন্হিত করা কঠিন ছিল।তাই এগুলো খুজে পেতে সমস্যা হতো।
কিন্তু বর্তমানে খুজে বের করা সহজ হওয়ার কারনে এগুলো সব তুলে ফেলা হয়েছে।যার ফলে বজ্রপাতে মানুুষ মৃত্যুর হার অনেক বেড়েছে।এছাড়াও এই অপপ্রচারের কারনে অনেক মানুষ হয়েছে ভিটে ছাড়া।হয়ত এসকল অপপ্রচার করা হয়েছে মানুষকে বোকা বনানোর জন্যই।এবং তার সর্বস্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য।আমরা বাঙ্গালীরা খুব সহযে গুজবে কান দেই।সত্যতা যাচাই করার সময় কোথায়?আর এসকল গুজব -কে সত্য প্রমাণিত করার জন্য ব্যাবহৃত হয় এমন ব্যাক্তিদের উদাহারন যারা রাতারাতি কোটিপতি হয়েছেন ভাগ্যের জোরে।