ডায়াবেটিস কি এটি কেন হয় এবং ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা
ডায়াবেটিস কি? |
ডায়াবেটিস একটি মানুষকে ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। ডায়াবেটিসের ফলে হৃদরোগ, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদির মতো জটিল সমস্যা ঘটা স্বাভাবিক।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে আমাদের শরীরে যে সকল সমস্যা দেখা দেয় তা হল-
⏩ডায়াবেটিস রোগের প্রধান সমস্যা কোন স্থান কেটে গেলে তা শুকাতে অনেক দেরি লাগে।
⏩স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া। বিশেষ করে রাতের বেলায় অতিরিক্ত প্রস্রাব হয়ে থাকে ডায়াবেটিস রোগীদের।
⏩প্রচুর পরিমাণে তৃষ্ণা লাগে।
⏩কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া।
⏩ অতিরিক্ত প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া।
⏩ চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মত ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে থাকা।
ডায়াবেটিস কেন হয় বা ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি-
আমরা প্রত্যেকটি মানুষই খাদ্য সাথে সর্বদা গ্রহণ করি। এবং আমাদের শরীর এই শর্করাকে ভেঙ্গে গ্লুকোজ বা চিনি তে রূপান্তরিত করে। এই গ্লুকোজ বা চিনি আমাদের শরীরের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের শক্তি যোগায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমাদের শরীরকে সচল রাখতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যখন আমাদের শরীর এই শর্করাকে ভেঙ্গে গ্লুকোজে রূপান্তরিত রূপান্তরিত করতে ব্যর্থ হয় তখনই এই অতিরিক্ত শর্করা আমাদের রক্তের জমাট বাঁধতে শুরু করে। এই শর্করাকে গ্লুকোজে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে আমাদের অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হয় এক বিশেষ ধরনের ইনসুলিন। আরে ইনসুলিন শর্করাকে গ্লুকোজে রূপান্তরিত করেন। যখন আমাদের অগ্ন্যাশয় থেকে এই ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়া বন্ধ হয়ে যায় বা এই প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে যখন আমাদের ডায়াবেটিস হয়।
অলসতা ডায়াবেটিসের কারন। |
ডায়াবেটিস বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রম না করা। কারণ শারীরিক পরিশ্রম না করার ফলে আমাদের শরীরের গ্রহণ করা শর্করা সব নিঃশেষ করতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে এই অতিরিক্ত শর্করা আমাদের শরীরে জমতে শুরু করে। এবং এর ফলে শর্করা কে ভেঙে গুলো খুঁজে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।
বর্তমান সময়ে আমাদের অধিকাংশ লোকজনই শারীরিক পরিশ্রমের কাজ কম করে। গ্রাম অঞ্চলের মানুষের তুলনায় শহর অঞ্চলের অনেক মানুষ রয়েছে যারা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করে না। তাই বলা চলে অলস জীবন-যাপন ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম কারণ।
বংশগত ধারা বা জীনগত প্রবলেম এর কারনেও ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। পূর্বপুরুষদের মধ্যে এ রোগটি থাকলে যে কোন ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায় কারণ গর্ভাবস্থায় থাকার সময় নিজের এবং সন্তানের জন্য ইনসুলিন পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি না হলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
হেলথ টিপস |
ডায়াবেটিস মূলত দুই প্রকার। টাইপ 1 ডায়াবেটিস এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস।
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস-
বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর মোট সংখ্যার ভেতরের 10% টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। টাইপ 1 ডায়াবেটিস এর লক্ষন শৈশব থেকে দেখা দিতে পারে এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর লক্ষণগুলো বাড়তে শুরু করে।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সাধারণত মানুষের বয়স যখন চল্লিশের কাছাকাছি হয় তখন টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে দক্ষিণ এশিয়ার লোকজন এর ভিতরে এটি ভিন্নতা দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ বয়স 25 বছর হওয়ার পর এই টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে।
তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন রাখতে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমানে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে এবং খাদ্যাভ্যাস কে পরিবর্তন করতে হবে।সর্বোপরি ডায়াবেটিস সম্পর্কে যথেস্ট সচেতনতাই পারে এর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে!