ঢাকার লালবাগ কেল্লা দেখতে এসে তোমার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির বর্ণনা দিয়ে তােমার প্রবাসী বন্ধুকে একখানা চিঠি লেখ
মুঘল যুগের বহু ঐতিহাসিক কর্মের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার লালবাগ কেল্লা। ঢাকার লালবাগ কেল্লা দেখতে এসে তোমার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির বর্ণনা দিয়ে তােমার প্রবাসী বন্ধুকে একখানা চিঠি লেখ।
গুলশান এভিনিউ
ঢাকা-১২১২
২০-০৩-২০১৯ ইং
প্রিয় প্রকাশ,
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা নিও। তুমি লন্ডন যাওয়ার পর অনেকদিন তােমার খবর নিতে পারিনি। আশা করি ভালাে আছ। আমি স্কুলে ছুটির অবসরে কিছুদিন পূর্বে ঢাকায় বড় আপার বাসায় গিয়েছিলাম। এখানে এসেই অপ্রত্যাশিতভাবে একটি ঐতিহাসিক স্থান লালবাগ দুর্গ’ দেখার সৌভাগ্য হলাে। সে সম্পর্কে তােমাকে কিছু জানানাের লােভ সংবরণ করতে পারলাম না। তাই লিখছি।তুমি তাে জান, বহু প্রাচীনকাল থেকে আমাদের দেশ ক্রমে ক্রমে স্থাপত্য শিল্পে সমৃদ্ধ হয়েছে। আর এরই একটি প্রকৃষ্ট সাক্ষী ঢাকার লালবাগ দুর্গ, যা মুঘল স্থাপত্যশিল্পের এক অনুপম নিদর্শন। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে পূর্ব-পশ্চিমে ১২০০ ফুট উত্তর-দক্ষিণে ৮০০ ফুট ভিতরে প্রাচীর ঘেরা মূল দুর্গ। বর্তমানে দুর্গটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত। দুর্গের অভ্যন্তরে ঘুরে ফিরে দেখলাম সতের শতকে নির্মিত মুঘল স্মৃতি বিজড়িত দরবার হল, পরিবিবির স্মৃতিসৌধ, হাম্মামখানা, পুকুর, মসজিদ,ফোয়ারা, নর্দমা ইত্যাদি। এছাড়া দেখলাম বিভিন্ন আকৃতির অসংখ্য ছােটখাটো কুঠরির ধ্বংসাবশেষ। বর্তমানে দরবার হলটি মুঘল আমলের প্রাচীন কীর্তিসমূহের জাদুঘর হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। এর ভিতর সংরক্ষিত আছে বন্দুক, পিস্তল, তীর-ধনুক, বর্শা, বল্লম,হাত-কুঠার, তরবারি, ঢাল, শিরােস্ত্রাণ, মুঘল বাদশাহদের জারিকৃত ফরমান, হস্তলিপি, পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি, চিত্রশােভিত মৃৎপাত্রসহ আরাে অনেক কিছু। আরাে দেখলাম মুঘল আমলের মুদ্রা। এছাড়া দুর্গের বিশাল উন্মুক্ত চত্বরটি ফুল ও ফল বাগানে সুশােভিত হয়ে এক মােহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।লালবাগ দুর্গ শুধু মুঘল স্মৃতির ধারক ও বাহক নয়; বর্তমানে এটি আমাদের পর্যটন শিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। এ দর্গটি দেশের প্রাচীন কীর্তিগুলাের মধ্যে অন্যতম এবং অতীত ইতিহাসের এক উজ্জ্বল স্বাক্ষর। দুর্গটি দেখে শুধু উপলদ্ধি করা যায় কী এর মহত্ত্ব, কী এর সৌন্দর্য, যা ভাষায় প্রকাশ করা সত্ব নয়। আজ এ পর্যন্তই
,ইতি
তোমার বন্ধু
রফিক