জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসােল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৫এ মে (১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ, মায়ের নাম জাহেদা খাতুন।
সত্য প্রকাশের দুরন্ত সাহস নিয়ে নজরুল আমৃত্যু সকল অন্যায় ও শােষণের বিরুদ্ধে ছিলেন সােচ্চার, প্রতিবাদী।
এজন্য বাংলা সাহিত্যের ‘বিদ্রোহী কবি' হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। আবার একই সঙ্গে কোমল দরদি মন নিয়ে ব্যথিত বঞ্চিত মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি। এক হাতে বাঁশি আরেক হাতে রণতূর্য নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন নজরুল; আর এসেই প্রচলিত শিল্প ধারা সমূহকে পাল্টে দিয়ে নতুন বিষয় ও নতুন শব্দে বাংলা সাহিত্য ও সংগীতকে করেছেন সমৃদ্ধতর। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া নজরুলের কর্মজীবনও ছিল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। মসজিদের ইমামতি,লেটোর দলে যােগদান, ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে সেনাবাহিনীর বাঙালি পল্টনে যােগদান, সাম্যবাদী ধারার রাজনীতি, পত্রিকা সম্পাদনা কিংবা চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়াসহ বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতায় তাঁর জীবন ছিল পূর্ণ। মাত্র তেতাল্লিশ বছর
বয়সে দুরারােগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় এই ঋদ্ধ ও সম্ভাবনাময় জীবন আমৃত্যু নির্বাক হয়ে যায়। বাংলাদেশ
স্বাধীন হলে নাগরিকত্ব এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে অসুস্থ নজরুলকে সসম্মানে এদেশে বরণ করে নেওয়া হয়।এর কিছুকাল পরে কবির মৃত্যু হলে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হয়।মূলত কবি হলেও সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তিনি বিচরণ করেছেন। তাঁর রচিত উপন্যাসের মধ্যে বাঁধনহারা',‘মৃত্যু-ক্ষুধা', 'কুহেলিকা' এবং গল্পগ্রন্থের মধ্যে ব্যথার দান’, ‘রিক্তের বেদন’, ‘শিউলিমালা' বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। যুগ-বাণী’, ‘দুর্দিনের যাত্রী’, ‘রুদ্র-মঙ্গল’, ‘রাজবন্দির জবানবন্দি' তাঁর উল্লেখযােগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ।কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট (১২ই ভাদ্র ১৩৮৩) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।