আইডিয়াল স্কুলের ওড়না নিষিদ্ধে দাবি সত্য নয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবােধে আঘাত করে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার সবসময় সতর্ক রয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন ।মসিউর রহমান তার প্রশ্নে ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ওড়না পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমন দাবি করে এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
আইডিয়াল স্কুল
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই অভিযােগের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে কোনও সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।মেয়েদের ওড়না পরা নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন,স্বার্বভৌম ও ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। বর্তমান সরকার ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্য সব ধর্মের চেতনা ও মূল্যবােধকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর । মসিউর রহমান রাঙ্গার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমরা শুরু করে দিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে।অভিযান চলছে এবং এটা চলতে থাকবে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সচেতনতার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জননিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ ও সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। দুর্নীতি, মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরাে টলারেন্স নীতি অনুসরণের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হলাে- নিরাপদ জীবন ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠন। সন্ত্রাস,সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলে পুলিশ বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি দলের মােরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের নানামুখী শ্রম কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ কর্মী বিদেশ যাচ্ছে।২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫৪ জনের বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।এ সময়ে রেমিটেন্স এসেছে ১৫৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সরকারি দলের আহসানুল ইসলামের (টিটু) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই ছাত্রছাত্রীরা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই হাতে কলমে কাজ শিখবে। আর এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।এজন্য আমরা স্কুল থেকেই নির্দিষ্ট বিষয়গুলােতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে আমরা শিক্ষাকে ঢেলে সাজাচ্ছি। তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছা করে বেকার থাকলে সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু এখন এত বেশি কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি তাতে যে কেউ চাইলে কিছু না কিছু করে খেতে পারে।

যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নানামুখী পদক্ষেপ
নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুবকরা বেকার থাকুক সেটা আমরা কখনাে চাই না। তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য শিক্ষিত হােক বা অর্ধশিক্ষিত, আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি; সেখান থেকে যে কোন যুবক বিনা জামানতে দুই লাখ পর্যন্ত টাকা নিতে পারে । সেটা এককভাবে বা যৌভাবে নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পাৱে সেই সুযােগটা আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। আমরা এত কর্মসূচি নিয়েছি, বেকার থাকার সুযােগ নেই। কেউ যদি
ইচ্ছে করে বেকার থাকে! প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম (টিটু) ও বিরােধী দলের প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার পৃথক দুই সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

যুব সমাজের কর্মসংস্থানে নেওয়া নানা কর্মসূচি তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সেখানে যুবকদের কর্মসংস্থান হবে। ডিজিটাল সেন্টার করেছি এবং কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি সেখানেও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে । তাছাড়া আমাদের অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে সেখানে যে কেউ চাইলে কিছু করতে পারে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url