রচনা সমগ্র : শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা
নিয়মানুবর্তিতা ও জীবন রচনা
ব্যক্তিজীবনে নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা : ব্যক্তি-জীবনে শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতার কোনাে বিকল্প নেই। উচ্ছৃখল, বিশৃঙ্খল তথা অনিয়মিত জীবনাচরণকারী ব্যক্তি কখনাে ভালাে কিছু এনে দিতে পারে না। যে মানুষ নিজেকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ রেখে সুনির্দিষ্ট নিয়মে কাজ করতে পারেনা তার দ্বারা কোনাে কাজই সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, কোনাে কোনাে মানুষ অপেক্ষাকৃত কম যােগ্যতাসম্পন্ন হয়েও নিয়মমতাে ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করাতে জীবনে অনেককিছু অর্জন করতে পেরেছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে।অন্যদিকে অনেক বেশি যােগ্য হয়েও অনেকে কেবল নিয়মানুবর্তিতার অভাবে জীবনে কোনাে কিছুই করতে পারেনি। তাই ব্যক্তিগত জীবনে যে কোনাে কাজে সফলতা অর্জন সমাজ ও জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, ছাত্রজীবনে সফলতা অর্জন, কর্মজীবনে ভালাে কিছু করা- এক কথায় ব্যক্তির যাবতীয় সবকিছুর জন্য নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা অপরিহার্য।
সমাজজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : মানুষ সামাজিক জীব। মানুষের প্রয়ােজনেই মানুষ সমাজ সৃষ্টি করেছে। স্বেচ্ছাচারী, অরণ্যবিহারী বিহঙ্গ মানব নিজেদের প্রয়ােজনেই সামাজিক নিয়মের শৃঙ্খলে নিজেদের আবদ্ধ করেছে। বিভিন্ন সামাজিক প্রথা-পদ্ধতি, রীতিনীতি, সংস্কার বিশ্বাস, আইন-কানুন, আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলতে হয় সামাজিক জীবনে। যে সমাজে নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা যত বেশি সে সমাজ তত সুন্দর ও উন্নত।শৃঙ্খলার অভাব থাকলে সমাজজীবনের সর্বত্র অসুস্থতা বিরাজ করে এবং নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিয়ম-শৃঙ্খলা আছে বলেই আমরা বাবা-মা, ভাই-বােন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব মিলে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে সমাজে বসবাস করতে পারি।
বৃহত্তর মানবজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : ইসলাম ধর্মে মানুষকে বলা হয়েছে ‘আশরাফুল মাখলুকাত' অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের পার্থক্য হচ্ছে তারা বুদ্ধিমান ও বিচার-বিবেচনা করে শৃঙ্খলামতাে সব কাজ করতে পারে। বৃহত্তর মানবসমাজ টিকে আছে।শুধু শৃঙ্খলার জন্য দেশে দেশে, জাতিতে জাতিতে, ধর্মে ধর্মে, মানুষে মানুষে যে সম্পর্ক তার স্থিতিশীলতার মূলেও রয়েছে শৃঙ্খলাবােধ।বস্তুত নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলাই কেবল বৃহত্তর মানবসমাজকে তথা মানব-জীবনকে সুখ, সমৃদ্ধি এনে দিতে পারে।
ছাত্রজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : ছাত্রজীবন মানবজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় যে যেমন শিক্ষা অর্জন করবে, তার ভবিষ্যৎ জীবনও সেই অনুসারে পরিচালিত হবে। ছাত্রজীবনে যে ব্যক্তি শৃঙ্খলার সাথে পড়ালেখা করবে না, উচ্ছঙ্খলভাবে জীবনযাপন করবে তার ভবিষ্যৎ জীবন কোনােক্রমেই ভালাে বা সুশৃঙ্খল হবে না। ছাত্রজীবনে যে নিয়ম-শৃঙ্খলা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সে জীবনে অনেক উন্নতি লাভ করতে পারে।
শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলা : শিক্ষাঙ্গনে বা বিদ্যালয়ে নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রয়ােজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। কারণ এখান থেকে মানুষ যে শিক্ষা পায় সারা জীবন তা-ই চর্চা করে। শিক্ষাজ্ঞানে যদি অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা থাকে, তবে জাতির ভবিষ্যৎ নাগরিকরা কখনো সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্ক, শিক্ষাঙ্গনে তাদের আচরণ, কাজ-কর্ম, সবই একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের অধীন হতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সুন্দর, সুশৃঙ্খল পরিবেশ সুন্দর ও উন্নত ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অপরিহার্য।
খেলাধুলায় নিয়ম-শৃঙ্খলা : প্রতিটি খেলারই এক একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলা রয়েছে। শৃঙ্খলা না থাকলে কোনাে খেলাই সুসম্পন্ন হতাে না বা তাতে আনন্দ পাওয়া যেত না। খেলার সময় যদি কোনাে খেলােয়াড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে; নিয়মবহির্ভূত কোনাে আচরণ করে তবে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। খেলার মাঠে যিনি রেফারি বা বিচারক থাকেন, অন্যদের তাকে মেনে চলতে হয়। শুধু খেলােয়ার নয়,এছাড়া দর্শক থাকে তাদেরকেও খেলা দেখার সময় নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়।
উন্নত দেশগুলােতে নিয়ম-শৃঙ্খলা : বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ, শক্তি-সামর্থ্য সবদিক থেকে যেসব দেশ বা জাতি উন্নত তাদের রীতিনীতি, চাল-চলন, জীবনাচরণ ইত্যাদির দিকে তাকালে সর্বাগ্রে যে জিনিসটি চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা। তারা সুশৃঙ্খল বা নিয়মানুবর্তিতার সাথে প্রতিটি কাজ সময়মতাে করে বলেই উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে আরােহণ করতে পেরেছে। যেমন : ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জাপান বা অন্যান্য ইউরােপীয় দেশসমূহ। এসব দেশে সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা কঠোরভাবে পালন করা হয়। আর সেজন্যই তারা আজ সবদিক থেকে শ্রেষ্ঠ।
সৈনিক জীবনে ও যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা : পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রেই বিশাল বিশাল সেনাবাহিনী রয়েছে। এ বিশাল সেনাবাহিনী একই নিয়মে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে তাদেরকে শৃঙ্খলার সাথে চলতে হয়। জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও তারা নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে না। একটু নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলেই তাদের পরাজয় নেমে আসে। জীবনে নিয়ম-শৃঙ্খলার যে কতটা প্রয়ােজন তা তাদের কথা ভাবলেই অনুভব করা যায়।
বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মানুবর্তিতার কুফল : শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতার যেমন সুফল রয়েছে, তেমনই বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মানুবর্তিতারও রয়েছে কুফল। বিশৃঙ্খল আচরণ ব্যক্তিকে সুখ-সমৃদ্ধি কিছুই দিতে পারে না। পরিণতিতে ধ্বংস বা পতন এনে দেয়। ব্যক্তি-জীবনের মতাে জাতীয় জীবনেও যদি শৃঙ্খলা না থাকে তবে জাতি কখনাে উন্নতি করতে পারে না।
উপসংহার : শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা প্রতিটি মানুষের জীবনে যেমন প্রয়ােজন, তেমনি প্রয়ােজন প্রতিটি জাতির জন্যও। শৃঙ্খলা বােধ না থাকলে কোনাে কাজেই সফলতা আসে না। পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়িক; এক কথায় জীবনের সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষা করা একান্ত অপরিহার্য। শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার সাথে কাজ করলে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার চর্চা করা উচিত।
অথবা, অনুচ্ছেদ রচনা শৃঙ্খলাবোধ
অথবা, নিয়মানুবর্তিতা বাংলা রচনা
অথবা, প্রবন্ধ রচনা নিয়মানুবর্তিতা
ভূমিকা : মহাজগতের দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান যতকিছু আছে সবই নিয়মের অধীন। আকাশের চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র সবই একটি সুশৃঙ্খল নিয়মে আবর্তিত হয়। চন্দ্র-সূর্যের উদয় ও অস্ত, হ্রাস-বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন, রাত-দিনের আবর্তন সর্বত্রই শৃঙ্খলা রাজত্ব।কোন কিছুই নিয়ম ছাড়া চলে না। যেখানেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে সেখানেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংস হয়ে যায় সবকিছু। নেপােলিয়ন তাই বলেছিলেন, "Discipline is the key to success which is compulsory to follow to balance the systems.ব্যক্তিজীবনে নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা : ব্যক্তি-জীবনে শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতার কোনাে বিকল্প নেই। উচ্ছৃখল, বিশৃঙ্খল তথা অনিয়মিত জীবনাচরণকারী ব্যক্তি কখনাে ভালাে কিছু এনে দিতে পারে না। যে মানুষ নিজেকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ রেখে সুনির্দিষ্ট নিয়মে কাজ করতে পারেনা তার দ্বারা কোনাে কাজই সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, কোনাে কোনাে মানুষ অপেক্ষাকৃত কম যােগ্যতাসম্পন্ন হয়েও নিয়মমতাে ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করাতে জীবনে অনেককিছু অর্জন করতে পেরেছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে।অন্যদিকে অনেক বেশি যােগ্য হয়েও অনেকে কেবল নিয়মানুবর্তিতার অভাবে জীবনে কোনাে কিছুই করতে পারেনি। তাই ব্যক্তিগত জীবনে যে কোনাে কাজে সফলতা অর্জন সমাজ ও জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, ছাত্রজীবনে সফলতা অর্জন, কর্মজীবনে ভালাে কিছু করা- এক কথায় ব্যক্তির যাবতীয় সবকিছুর জন্য নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা অপরিহার্য।
সমাজজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : মানুষ সামাজিক জীব। মানুষের প্রয়ােজনেই মানুষ সমাজ সৃষ্টি করেছে। স্বেচ্ছাচারী, অরণ্যবিহারী বিহঙ্গ মানব নিজেদের প্রয়ােজনেই সামাজিক নিয়মের শৃঙ্খলে নিজেদের আবদ্ধ করেছে। বিভিন্ন সামাজিক প্রথা-পদ্ধতি, রীতিনীতি, সংস্কার বিশ্বাস, আইন-কানুন, আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলতে হয় সামাজিক জীবনে। যে সমাজে নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলা যত বেশি সে সমাজ তত সুন্দর ও উন্নত।শৃঙ্খলার অভাব থাকলে সমাজজীবনের সর্বত্র অসুস্থতা বিরাজ করে এবং নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিয়ম-শৃঙ্খলা আছে বলেই আমরা বাবা-মা, ভাই-বােন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব মিলে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে সমাজে বসবাস করতে পারি।
বৃহত্তর মানবজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : ইসলাম ধর্মে মানুষকে বলা হয়েছে ‘আশরাফুল মাখলুকাত' অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের পার্থক্য হচ্ছে তারা বুদ্ধিমান ও বিচার-বিবেচনা করে শৃঙ্খলামতাে সব কাজ করতে পারে। বৃহত্তর মানবসমাজ টিকে আছে।শুধু শৃঙ্খলার জন্য দেশে দেশে, জাতিতে জাতিতে, ধর্মে ধর্মে, মানুষে মানুষে যে সম্পর্ক তার স্থিতিশীলতার মূলেও রয়েছে শৃঙ্খলাবােধ।বস্তুত নিয়মানুবর্তিতা বা শৃঙ্খলাই কেবল বৃহত্তর মানবসমাজকে তথা মানব-জীবনকে সুখ, সমৃদ্ধি এনে দিতে পারে।
ছাত্রজীবনে নিয়মানুবর্তিতা : ছাত্রজীবন মানবজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় যে যেমন শিক্ষা অর্জন করবে, তার ভবিষ্যৎ জীবনও সেই অনুসারে পরিচালিত হবে। ছাত্রজীবনে যে ব্যক্তি শৃঙ্খলার সাথে পড়ালেখা করবে না, উচ্ছঙ্খলভাবে জীবনযাপন করবে তার ভবিষ্যৎ জীবন কোনােক্রমেই ভালাে বা সুশৃঙ্খল হবে না। ছাত্রজীবনে যে নিয়ম-শৃঙ্খলা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সে জীবনে অনেক উন্নতি লাভ করতে পারে।
শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলা : শিক্ষাঙ্গনে বা বিদ্যালয়ে নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রয়ােজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। কারণ এখান থেকে মানুষ যে শিক্ষা পায় সারা জীবন তা-ই চর্চা করে। শিক্ষাজ্ঞানে যদি অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা থাকে, তবে জাতির ভবিষ্যৎ নাগরিকরা কখনো সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্ক, শিক্ষাঙ্গনে তাদের আচরণ, কাজ-কর্ম, সবই একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের অধীন হতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সুন্দর, সুশৃঙ্খল পরিবেশ সুন্দর ও উন্নত ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অপরিহার্য।
খেলাধুলায় নিয়ম-শৃঙ্খলা : প্রতিটি খেলারই এক একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলা রয়েছে। শৃঙ্খলা না থাকলে কোনাে খেলাই সুসম্পন্ন হতাে না বা তাতে আনন্দ পাওয়া যেত না। খেলার সময় যদি কোনাে খেলােয়াড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে; নিয়মবহির্ভূত কোনাে আচরণ করে তবে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। খেলার মাঠে যিনি রেফারি বা বিচারক থাকেন, অন্যদের তাকে মেনে চলতে হয়। শুধু খেলােয়ার নয়,এছাড়া দর্শক থাকে তাদেরকেও খেলা দেখার সময় নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়।
উন্নত দেশগুলােতে নিয়ম-শৃঙ্খলা : বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ, শক্তি-সামর্থ্য সবদিক থেকে যেসব দেশ বা জাতি উন্নত তাদের রীতিনীতি, চাল-চলন, জীবনাচরণ ইত্যাদির দিকে তাকালে সর্বাগ্রে যে জিনিসটি চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা। তারা সুশৃঙ্খল বা নিয়মানুবর্তিতার সাথে প্রতিটি কাজ সময়মতাে করে বলেই উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে আরােহণ করতে পেরেছে। যেমন : ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জাপান বা অন্যান্য ইউরােপীয় দেশসমূহ। এসব দেশে সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা কঠোরভাবে পালন করা হয়। আর সেজন্যই তারা আজ সবদিক থেকে শ্রেষ্ঠ।
সৈনিক জীবনে ও যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা : পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রেই বিশাল বিশাল সেনাবাহিনী রয়েছে। এ বিশাল সেনাবাহিনী একই নিয়মে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে তাদেরকে শৃঙ্খলার সাথে চলতে হয়। জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও তারা নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে না। একটু নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলেই তাদের পরাজয় নেমে আসে। জীবনে নিয়ম-শৃঙ্খলার যে কতটা প্রয়ােজন তা তাদের কথা ভাবলেই অনুভব করা যায়।
উপসংহার : শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা প্রতিটি মানুষের জীবনে যেমন প্রয়ােজন, তেমনি প্রয়ােজন প্রতিটি জাতির জন্যও। শৃঙ্খলা বােধ না থাকলে কোনাে কাজেই সফলতা আসে না। পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়িক; এক কথায় জীবনের সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষা করা একান্ত অপরিহার্য। শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার সাথে কাজ করলে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার চর্চা করা উচিত।