ফেসবুক আইডি হ্যাংকি থেকে বাঁচার এবং নিরাপদ রাখার উপায়

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জনপ্রিয়তা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে।

তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের  বদৌলতে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া হলো ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, মিডিয়াম, লিংকেডিন  ইত্যাদি।এসকল আইডি হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায় এবং কিভাবে নিরাপদ থাকতে পারি তা আমাদের সকলের জানা উচিত।
হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়
এ সকল  সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুক হচ্ছে সবচাইতে জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এবং সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়  সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘটা  অপরাধ গুলোর মধ্যে ফেসবুক শীর্ষে রয়েছে। অর্থাৎ ফেসবুকের মাধ্যমেই অপরাধগুলো বেশি হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা এবং প্রচুর পরিমাণ মানুষ ফেসবুকে সারাদিন একটিভ থাকে।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন পত্র পত্রিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে আমরা এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারছি। এবং এসকল সোশ্যাল মিডিয়ায় আমারা  কতটা নিরাপদ আছি এবং কতটা নিরাপদ থাকতে পারবো এটি প্রশ্নবিদ্ধ  হয়ে গিয়েছে। এ কারণে প্রথমেই মাথায় আসে কিভাবে আমরা  সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারি?ব্যক্তিগত সুরক্ষার পাশাপাশি আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য গুলোর  সুরক্ষাও হুমকি স্বরূপ হয়ে উঠছে।



এসকল সমস্যার প্রধান কারণ হচ্ছে হ্যাকারদের প্রবণতা।এর পাশাপাশি কিছু সন্ত্রাসবাদি সংগঠনের তৎপরতা। তারা বিভিন্নভাবে আপনাকে ফাঁদে ফেলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতানো থেকে শুরু করে আপনাকে  যেকোন বিপদে ফেলার জন্য তৎপর হয়ে রয়েছে তারা। তাই আজ আমরা জানবো কিভাবে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট গুলো নিরাপদ রাখতে পারি। এবং যে সকল নিয়ম কানুন মেনে চললে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিরাপদ থাকতে পারবো সেসব বিষয় সম্পর্কে।


সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট গুলোর  নিরাপত্তা সম্পর্কে  জেনে নেই-


আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্টে যেকোনো কারণে  বেহাত হয়ে যেতে পারে। এবং একইসাথে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো অন্য কারো হাতে চলে যেতে পারে। আর এ কারণেই সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট গুলোকে যথেষ্ট সিকিউরিটি সম্পন্ন করে তোলা উচিত। সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট যেভাবে আরো বেশি সিকিউর করে তুলবেন সেগুলো  হলো!


প্রথমে আসি পাসওয়ার্ডের কথায়! সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট গুলো লগইন করার ক্ষেত্রে ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড হচ্ছে প্রধান উপায়। আর এ কারণে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট গুলোর পাসওয়ার্ড অবশ্যই কঠিন এবং সহজে বোধগম্য না হয় এমন দেয়া উচিত।

অর্থাৎ আপনার সোশ্যাল মিডিয়া পাসওয়ার্ড গুলোর ভিন্নতা আনা দরকার। সাধারণত আমরা পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রের নাম মোবাইল নাম্বার, শুধুমাত্র সংখ্যা বা শুধুমাত্র লেটার ব্যবহার করে থাকি। এটি করা কখনই উচিত নয় কারণ শুধুমাত্র লেটার বা নম্বর ব্যবহার করলে খুব সহজেই আপনার পাসওয়ার্ড ক্রাক করে ফেলতে পারে হ্যাকাররা। তাই পাসওয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই বর্ণ,সংখ্যা,ছোট হাতের বর্ণ, বড়হাতের বর্ণ,চিন্হ  ইত্যাদি ব্যবহার করবে। উদাহরণস্বরূপ-Aaaa@1111#aaaa&2222 
এরকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারি। তাহলে আপনার পাসওয়ার্ড সম্পর্কে অন্য কারো ধারণা করা কঠিন হয়ে পড়বে।


এছাড়া প্রতিটি একাউন্টের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করুন। এর ফলে কোন একটি একাউন্ট হ্যাক হলেও বাকি গুলো সুরক্ষিত থাকবে।

ব্যাক্তিগত তথ্যগুলো হাইড করে রাখা-
আমাদের সোস্যাল মিডিয়া প্রফাইল গুলোতে ওয়েবসাইট, ইমেইল, ফোন নাম্বার, জন্ম তারিখ ইত্যাদি দেওয়া থাকে।এর ভিতরে আমাদের যে ইমেইল দিয়ে একাউন্ট গুলো তৈরি সেই ইমেইলটি জনসম্মুখে না আনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

কারন আপনার একাউন্টের ইমেইল পেয়ে যাওয়া মানেই হলো আপনি হ্যাকিংয়ের জন্য এক ধাপ অগ্রসর হয়েছেন।এছাড়া ইমেইল এর পাশাপাশি জন্ম তারিখ ও গোপনীয় রাখা উচিত।

প্রাইভেসি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রেও সতর্কতার দরকার রয়েছে। আমরা বিশেষ করে ফেসবুকে যেন আমাদের ছবি/পোস্ট গুলো অনেক মানুষ দেখতে পারেন বা খুজে পান তাই প্রাইভেসি পাবলিক (Public)  করে দেই। যা কখনোই উচিত নয়। প্রাইভেসি অবশ্যই ফ্রেন্ড রাখা উচিত। বড় জোর ফ্রেন্ড অফ ফ্রেন্ড (Friend of friend)  করে দিতে পারেন।তবে কখনোই পাবলিক নয়।

এছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় অনেক মানুষ তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র(NID) বা পাসপোর্ট (passport) এর ছবি ফেসবুক আপলোড করেন। যা কখনোই উচিত নয়। এটি একান্তই ব্যাক্তিগত তাই এগুলো ফেসবুকে শেয়ার করা হতে বিরত থাকতে হবে।

ব্যাবহার করতে পারেন দ্বিস্তর বিশিষ্ট সুরক্ষা ব্যাবস্থা ( two factor authentication )
 সাম্প্রতিক সময়ে এটি একটি উচ্চ স্তরের সুরক্ষা ব্যাবস্থা। এর ফলে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেললেও দ্বিতীয় স্তরে গিয়ে আটকা পড়ে যাবে। কারন এটি এমন একটি ব্যাবস্থা যেটি প্রতিবার লগিনের ক্ষেত্রে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড তৈরি করে। এবং যা ব্যাবহারকারীর ফোনে প্রেরন করে। তাই যদি আপনার এটি চালু করা থাকে তাহলে আপনার সিমটিতে আসা কোড ছাড়া কখনোই লগিন করতে পারবেনা।

⏩কিভাবে ফেসবুকে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করবেন

সর্বোপরি আমাদের ব্যাক্তিগত সচেতনতাই পারে আমাদের সুরক্ষিত রাখতে।তাই আমরা নিজেরা সচেতন হই।

এবং অন্যকে সচেতন করতে পোষ্টটি সকলের মাঝে শেয়ার করি।
Next Post Previous Post