বায়ােমেট্রিক্স কি এবং বিষয়টির সুবিধা অসুবিধা সহ বিস্তারিত আলোচনা
বায়ােমেট্রিক্স (Biometrics) প্রযুক্তি যিশুখ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ২৯০০ বছর পূর্ব হতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৪শ শতকে চীনে ব্যবসায়ীরা শিশুদের শনাক্ত করার জন্য তাদের হাতের তালু ও পায়ের ছাপ ব্যবহার কত। ১৯শ শতকের শেষের দিকে আঙুলের ছাপ ব্যবহার শুরু হয়। মূলত শত্রুদের শনাক্ত করতে বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতাে। বিশেষ করে ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং আমেরিকাতে এর প্রচলন শুরু হয়। ১৯৮০-এর দশকে বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য উদঘাটিত ও শনাক্ত করতে বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। প্রত্যেক মানুষ অন্য মানুষ অপেক্ষা কমপক্ষে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে আলাদা।
এর উপর ভিত্তি করে বায়ােমেট্রিক্স-এর প্রকারভেদ নিম্নরূপ করা যায়-
(ক) শারীরবৃত্তীয় বায়ােমেট্রিক্স পদ্ধতি:
▪ আঙুলের ছাপ গঠন (ফিঙ্গার প্রিন্ট)
▪ হাতের রৈখিক গঠন (হ্যান্ড জিওমেট্রি)
▪ চোখের অক্ষিগােলকের গঠন (আইরিশ/রেটিনা স্ক্যানিং)
▪ মুখমণ্ডল অবয়ব গঠন (ফেইস রিকোগনিশন)
ডিএনএ গঠন (ডিএনএ স্ট্রাকচার)
(খ) আচরণগত বায়ােমেট্রিক্স পদ্ধতি:
▪ কিবাের্ডে টাইপিং গতি যাচাইকরণ (টাইপিং কি স্ট্রোক ভেরিফিকেশন)
▪ হাতে করা স্বাক্ষর যাচাইকরণ (সিগনেচার ভেরিফিকেশন)
▪ কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ (ভয়েস রিকোগনিশন)
এসব বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে একটি মানুষকে চিহ্নিত করার নামই হলাে বায়ােমেট্রিক্স। যেহেতু এই বৈশিষ্ট্য গুলাে স্বতন্ত্র তাই এগুলাে যেকোনাে জায়গায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যায়। এ কাজটি তিন ধাপে করতে হয়-
i. বায়ােমেট্রিক্স রেজিস্ট্রেশন।
ii. ভেরিফিকেশন।
iii. পরিচিতি নির্ণয়।
তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি বিশ্বে বায়ােমেট্রিক্স শব্দটি বায়ােমেট্রিক্স প্রমাণীকরণ’ (Biometrics Authentication) সমার্থক শব্দ হিসেবে পরিচিত যেখানে বায়ােমেট্রিক্স ইনপুটের ভিত্তিতে নিরাপত্তা অনুমােদন নিশ্চিত হয়। বিভিন্ন ধরনের Biometrics Authentication রয়েছে যেমন আঙুলের ছাপ স্ক্যানিং, চোখের রেটিনা স্ক্যানিং, মুখমণ্ডল শনাক্ত করণ এবং কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ। তােমরা হয়তাে মেশিন রিডেবল পাসপাের্টের কথা শুনে থাকবে। এ ধরনের পাসপাের্ট বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে করা।
☑ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর বিস্তারিত আলোচনা
এখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আঙুলের ছাপ ও মুখের ছবি পাসপাের্টের জন্য নিরাপত্তা ডেটা হিসেবে কাজ করে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি পরিষ্কার করা যেতে পারে। যেমন কোনাে ব্যক্তির মুখমণ্ডলের ছবি কোনাে একটি ক্যামেরার সাহায্যে ধারণ করা হয়। পরে আলােকচিত্রটি বায়ােমেট্রিক্স সফটওয়্যারের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়, যা কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করা হয়।
অতঃপর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যখন পুনরায় ক্যামেরার সামনে আসে তখন কম্পিউটারে রক্ষিত ছবির (বাইনারি বিট) সাথে মিলিয়ে দেখে অতি কাছা কাছি হলে ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারে। সম্প্রতি আমরা যে সকল ল্যাপটপ বা নােটবুক বা নেটবুক বা পিডিএ ব্যবহার করছি সেখানে লগইন করতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ আঙুলকে সেন্সরের উপর দিয়ে টেনে নিয়ে গেলে স্ক্যানিং ইমেজটি পূর্বে সংরক্ষিত ইমেজের সাথে মিলিয়ে লগইন করতে অনুমতি দেয়।
☑ রোবটিক্স ইন্জিনিয়ারিং এর বিস্তারিত
এতে করে অতি বিরক্তিকর ব্যবহারকারীর নাম এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখা ও ব্যবহারের হাত হতে রক্ষা পাওয়া যায়। এ প্রযুক্তি যে সকল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তার বিবরণ নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেয়া হলাে, যাতে করে তােমরা সহজে বিষয়টি বুঝতে পার-
বিচারিক বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ মৃতদেহ শনাক্তকরণ।
▪ অপরাধী শনাক্ত করা।
▪ পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ণয়।
▪ হারানাে শিশু বের করা।
সরকারি বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ পরিচয়পত্র ও বায়ােমেট্রিক্স পাসপাের্ট।
▪ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ভােটার নিবন্ধন।
▪ সম্পদ বণ্টন।
▪ সীমানা (বর্ডার) অতিক্রম।
বাণিজ্যিক বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ এটিএম ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং।
▪ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও কম্পিউটারে লগ ইন।
▪ মােবাইল ফোন।
▪ ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড।
যেকোনাে ধরনের বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিরই কিছু না কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।
বায়োমেট্রিকের সুবিধা সমূহ- মুখমণ্ডল, কণ্ঠস্বর ও স্বাক্ষর চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তি অত্যধিক সহজ। অ্যাকসেস সময়ও কম (৫ সেকেন্ডের মধ্যে) প্রয়ােজন হয়। অন্যদিকে ডিএনএ, আইরিস স্ক্যানিং ও আঙুলের ছাপের ক্ষেত্রে যথার্থতা বজায় থাকে বিধায় এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়।
☑ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি বা VR প্রযুক্তি
বায়োমেট্রিকের অসুবিধা সমূহ- মুখমণ্ডলের ক্ষেত্রে আলাের প্রতিফলন, কণ্ঠস্বরের ক্ষেত্রে শারীরিক ফিটনেসের উপর শব্দের তীব্রতার ওঠানামা, স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে প্রতি ৫০টির মধ্যে একটি না মেলা, ডিএনএ, আইরিস স্ক্যানিং ও আঙুলের ছাপের ক্ষেত্রে বেশি মেমরির প্রয়ােজন এবং খরচের পরিমাণও বেশি হয়।
Biometric information |
(ক) শারীরবৃত্তীয় বায়ােমেট্রিক্স পদ্ধতি:
▪ আঙুলের ছাপ গঠন (ফিঙ্গার প্রিন্ট)
▪ হাতের রৈখিক গঠন (হ্যান্ড জিওমেট্রি)
▪ চোখের অক্ষিগােলকের গঠন (আইরিশ/রেটিনা স্ক্যানিং)
▪ মুখমণ্ডল অবয়ব গঠন (ফেইস রিকোগনিশন)
ডিএনএ গঠন (ডিএনএ স্ট্রাকচার)
(খ) আচরণগত বায়ােমেট্রিক্স পদ্ধতি:
▪ কিবাের্ডে টাইপিং গতি যাচাইকরণ (টাইপিং কি স্ট্রোক ভেরিফিকেশন)
▪ হাতে করা স্বাক্ষর যাচাইকরণ (সিগনেচার ভেরিফিকেশন)
▪ কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ (ভয়েস রিকোগনিশন)
এসব বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে একটি মানুষকে চিহ্নিত করার নামই হলাে বায়ােমেট্রিক্স। যেহেতু এই বৈশিষ্ট্য গুলাে স্বতন্ত্র তাই এগুলাে যেকোনাে জায়গায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যায়। এ কাজটি তিন ধাপে করতে হয়-
i. বায়ােমেট্রিক্স রেজিস্ট্রেশন।
ii. ভেরিফিকেশন।
iii. পরিচিতি নির্ণয়।
তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি বিশ্বে বায়ােমেট্রিক্স শব্দটি বায়ােমেট্রিক্স প্রমাণীকরণ’ (Biometrics Authentication) সমার্থক শব্দ হিসেবে পরিচিত যেখানে বায়ােমেট্রিক্স ইনপুটের ভিত্তিতে নিরাপত্তা অনুমােদন নিশ্চিত হয়। বিভিন্ন ধরনের Biometrics Authentication রয়েছে যেমন আঙুলের ছাপ স্ক্যানিং, চোখের রেটিনা স্ক্যানিং, মুখমণ্ডল শনাক্ত করণ এবং কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ। তােমরা হয়তাে মেশিন রিডেবল পাসপাের্টের কথা শুনে থাকবে। এ ধরনের পাসপাের্ট বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে করা।
☑ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর বিস্তারিত আলোচনা
এখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আঙুলের ছাপ ও মুখের ছবি পাসপাের্টের জন্য নিরাপত্তা ডেটা হিসেবে কাজ করে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি পরিষ্কার করা যেতে পারে। যেমন কোনাে ব্যক্তির মুখমণ্ডলের ছবি কোনাে একটি ক্যামেরার সাহায্যে ধারণ করা হয়। পরে আলােকচিত্রটি বায়ােমেট্রিক্স সফটওয়্যারের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়, যা কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করা হয়।
বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি |
☑ রোবটিক্স ইন্জিনিয়ারিং এর বিস্তারিত
এতে করে অতি বিরক্তিকর ব্যবহারকারীর নাম এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখা ও ব্যবহারের হাত হতে রক্ষা পাওয়া যায়। এ প্রযুক্তি যে সকল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তার বিবরণ নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেয়া হলাে, যাতে করে তােমরা সহজে বিষয়টি বুঝতে পার-
বিচারিক বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ মৃতদেহ শনাক্তকরণ।
▪ অপরাধী শনাক্ত করা।
▪ পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ণয়।
▪ হারানাে শিশু বের করা।
সরকারি বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ পরিচয়পত্র ও বায়ােমেট্রিক্স পাসপাের্ট।
▪ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ভােটার নিবন্ধন।
▪ সম্পদ বণ্টন।
▪ সীমানা (বর্ডার) অতিক্রম।
বাণিজ্যিক বিভাগে বায়োমেট্রিক্সের ব্যাবহার-
▪ এটিএম ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং।
▪ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও কম্পিউটারে লগ ইন।
▪ মােবাইল ফোন।
▪ ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড।
যেকোনাে ধরনের বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিরই কিছু না কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।
বায়োমেট্রিকের সুবিধা সমূহ- মুখমণ্ডল, কণ্ঠস্বর ও স্বাক্ষর চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তি অত্যধিক সহজ। অ্যাকসেস সময়ও কম (৫ সেকেন্ডের মধ্যে) প্রয়ােজন হয়। অন্যদিকে ডিএনএ, আইরিস স্ক্যানিং ও আঙুলের ছাপের ক্ষেত্রে যথার্থতা বজায় থাকে বিধায় এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়।
☑ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি বা VR প্রযুক্তি
বায়োমেট্রিকের অসুবিধা সমূহ- মুখমণ্ডলের ক্ষেত্রে আলাের প্রতিফলন, কণ্ঠস্বরের ক্ষেত্রে শারীরিক ফিটনেসের উপর শব্দের তীব্রতার ওঠানামা, স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে প্রতি ৫০টির মধ্যে একটি না মেলা, ডিএনএ, আইরিস স্ক্যানিং ও আঙুলের ছাপের ক্ষেত্রে বেশি মেমরির প্রয়ােজন এবং খরচের পরিমাণও বেশি হয়।