রচনা: জলবায়ুর পরিবর্তন অথবা, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন
রচনাঃ জলবায়ুর পরিবর্তন।
অথবা, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব।
অথবা, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রচনা
অথবা, বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু রচনা
অথবা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও আমাদের করণীয়
অথবা, জলবায়ুর পরিবর্তন- আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই।
[সংকেত : ভূমিকা—বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ-বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে এর প্রভাব-বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও ক্ষয়ক্ষতি—বৈশ্বিক উষ্ণতা রােধে আমাদের করণীয়-উপসংহার।]
ভূমিকা:
জলবায়ুর পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বের জন্য অন্যতম বড় হুমকি হিসেবে উপনীত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় কারণ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। যার ফলে আবহাওয়া পরিবর্তিত হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিশ্ব ক্রমাগত দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া। মানবসৃষ্ট দূষণ এবং বনভূমি উজাড় করার ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে, যা কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের সমন্বয়ে গঠিত। এর কারণে বিকিরিত তাপশক্তি পুনরায় বায়ুমণ্ডলে ফিরে যাওয়ার পথে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, আর ঠিক এভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবী তথা বায়ুমণ্ডলের। ১৮৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকির মধ্যে আছে বাংলাদেশসহ আরাে কিছু ছােট ছােট রাষ্ট্র। জানুয়ারি ২০০৮-এ প্রকাশিত 'Climate of Disaster' এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে এই গ্রহের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।”
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি কারণ:
পৃথিবীকে বেষ্টনকারী আবহাওয়ামণ্ডলে ‘ওজোন স্তর’ নামে অদৃশ্য এক বেষ্টনী বিদ্যমান, যা পৃথিবীতে সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মি প্রবেশ রােধ করে এবং বিকিরণ প্রক্রিয়ায় পৃথিবী থেকে আসা তাপ মহাশূন্যে পুনরায় ফিরে যেতে সহায়তা করে। কিন্তু মানবসৃষ্ট দূষণ ও গৃহস্থালি পণ্য যেমন- ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, বিভিন্ন ধরতে স্প্রে ইত্যাদিতে ব্যবহৃত সিএফসি (ক্লোরােফ্লোরাে কার্বন) গ্যাস, শিল্প বর্জ্য, কল-কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া থেকে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন গ্যাস দ্বারা প্রকৃতি প্রদত্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী, ওজোন ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। একদিকে পরিবেশ দূষণ এবং অন্যদিকে বনভূমি উজাড় করার ফলে অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড শােষিত হচ্ছে না। আর এসব কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এবং ওজোন ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, উত্তপ্ত হচ্ছে পৃথিবী। বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে এর প্রভাব : “বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে যে সব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম”- অভিমত পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের লক্ষণ মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ভয়াবহ পরিণতিসমূহ আলােচনা করা হলাে :
১. সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য পরিণতি হলাে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই বর্ধিত তাপমাত্রার ফলে হিমালয় পর্বত, উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকাসহ অন্যান্য ভূ-ভাগের সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ । যেখানে অসংখ্য নদনদী বয়ে চলেছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা ১° সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের ১১ শতাংশ ভূমি সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এর ফলে ৫৫ মিলিয়ন লােক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি বছর ৭ মি.মি. হারে বাড়ছে, যেখানে ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হার ৫-৬ মি.মি/বছর। যার ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হার ১-২ মি.মি./বছর। Intergovernmental Panel of Climate Change (IPCC)-এর এক সমীক্ষায় বলা হয়, বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি দশকে ৩.৫ থেকে ১৫ মি.মি. বৃদ্ধি পেতে পারে। এমনকি ২১০০ সাল নাগাদ তা ৩০ সে.মি. এ পৌছাতে পারে ।
২. মরুকরণ: জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে মরুকরণের সূত্রপাত ঘটবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ভূ-পৃষ্ঠে পানির পরিমাণ ক্রমাগত হ্রাস পাবে। সমগ্র ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হবে। যার ফলে কৃষি কাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে করে জীব বৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
৩. নিমভূমিতে প্লাবন: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অন্যান্য নিম্নভূমি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বর্গ কি.মি. এলাকা প্রত্যক্ষ এবং পরােক্ষ ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
৪. জীববৈচিত্র্য ধ্বংস: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং বনজঙ্গল ধ্বংসের ফলে বিভিন্ন প্রজাতি আজ বিলুপ্তির পথে। কারণ প্রতিকূল আবহাওয়ার সাথে তারা খাপ খাওয়াতে পারছে না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীবজন্তুর আবাস ভূমি সুন্দরবন। পরিবেশ ও ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রের উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধি পেলে সুন্দরবনের প্রায় ৭০ ভাগ তলিয়ে যাবে।
৫. নদনদীর প্রবাহ হ্রাস: বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির জন্য প্রয়ােজন মৃদু পানির। উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে নদনদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হবে।
৬. পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি: বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে লােনা পানি সহজে উপকূলীয় অঞল ও দ্বীপসমূহে প্রবেশ করায় ১.৪ মিলিয়ন হেক্টর এলাকার উন্মুক্ত জলাশয় ও ভূ-গর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হয়ে পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তিত হওয়ার সাথে সাথে এই লবণাক্ততার মাত্রা আরও অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৭. আকস্মিক বন্যা: জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের প্রায় ১ হাজার ৪০০ বর্গ কিলােমিটার এলাকায় এ ধরনের বন্যার সৃষ্টি হয়।
৮, নদীভাঙন: জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশে অন্যতম একটি সমস্যা দেখা দেবে সেটি হলাে নদীভাঙন । অতিরিক্ত নদী ভাঙনের ফলে মেঘনা ও পদ্মার তীরবর্তী এলাকা সমূহের বিপুল পরিমাণ জনগােষ্ঠী সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে। IPCC-এর এক সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে, প্রতি দুই সেন্টিমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে উপকূলীয় তটরেখা গড়ে ২-৩ মিটার স্থলভাগের দিকে অগ্রসর হবে। ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ মূল ভূ-পৃষ্ঠের ৮০-১২০ মিটার পর্যন্ত অতিক্রম করবে।
৯. খরা: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে মাটির বাষ্পীভবনের হার বেড়ে যাওয়া এবং বৃষ্টিপাতের অপর্যাপ্ততার কারণে খরা দেখা দিচ্ছে। উষ্ণতা বাড়তে থাকলে এর আকার মারাত্মকভাবে ধারণ করবে।
১০. সামুদ্রিক ঝড় ও জলােচ্ছ্বাস : পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই সামুদ্রিক ঝড় ও জলােচ্ছাসের তীব্রতাও বেড়ে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ের সিডর ও আইলা’ তারই ফলাফল।
পরিবেশ দূষণের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। মানুষের সৃষ্ট দূষণের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি হয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য খুবই মারাত্মক। অবশ্য এর দায়ভার সবচেয়ে বেশি ধনী দেশ গুলাের। অনেক ধনী রাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত কিয়ােটো প্রটোকল, ১৯৯৭' কার্যকর করেনি।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও ক্ষয়ক্ষতি :
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলাফল খুবই মারাত্মক। ইতােমধ্যে এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহে ক্ষয়-ক্ষতির মাত্রা অত্যন্ত ব্যাপক হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাংলাদেশের উচ্চতা কম থাকার কারণে বাংলাদেশের জন্য এটির রূপ আরাে ভয়াবহ হবে।
১. জনগােষ্ঠীর বিনাশ: বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থানের কারণে যে কোনাে মাঝারি প্লাবনে দেশের ৬৫ শতাংশ জনগােষ্ঠী প্রত্যক্ষ কিংবা পরােক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্লাবনভূমির সংখ্যাও বাড়তে থাকবে। এতে অনেক লােকের জীবন ও জীবিকা বিপন্নের সম্মুখীন হবে।
২. অবকাঠামােগত ক্ষয়ক্ষতি : জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলাফল শুধু যে মানুষের উপর প্রভাব ফেলবে তাও নয়, এর কারণে অবকাঠামাের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে। ১৯৯০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে মােট বস্তুগত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৮,০০০ বিলিয়ন টাকা এর মধ্যে ভৌত অবকাঠামাে রয়েছে ২৮০ বিলিয়ন টাকা মূল্যের। IPCC-এর সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে প্লাবনজনিত কারণে বস্তুগত সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ হবে ২৪২ মিলিয়ন টাকা।
৩. কৃষির ধ্বংস সাধন: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের যে খাত সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তাহলে কৃষি খাত। IPCC- এর সমীক্ষা অনুযায়ী প্লাবনের কারণে দেশে আমন ধানের উৎপাদন ১৩.৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন হ্রাস পাবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি উৎপাদন বর্তমানের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যেতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে খরার ব্যাপ্তি আরাে বেড়ে তা ২২৮০ কি.মি. পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। গমের আবাদ অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং আলুর চাষও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
৪. লােনা পানির অনুপ্রবেশ : বাংলাদেশের প্রায় ১৫ শতাংশ লােক সমুদ্র তীরবর্তী অঞলে বসবাস করে। IPCC-এর সমীক্ষা অনুযায়ী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০০ সে.মি. বৃদ্ধি পেলে ২৫,০০০ বর্গ কি.মি. এলাকায় লােনা পানির অনুপ্রবেশ ঘটবে। ফলে দেশের প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ লােকের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হবে। স্বাদু পানির মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হবে। এবং জলজ ও উদ্ভিদের জীবন। পুরােপুরি হুমকির সম্মুখীন হবে।
বৈশ্বিক উষ্ণতারােধে আমাদের করণীয় :
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে তা শুধু বাংলাদেশের জন্য হুমকি নয় বরং সারা বিশ্ব ও মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এখনই সময় বৈশ্বিক উষ্ণতাররাধে সবার এক হবার। এই সংকট মােকাবিলায় যে বিষয়গুলাের উপর গুরুত্ব দিতে হবে সেগুলাে হলাে :
১. ব্যাপকভাবে বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
২. ওজোনস্তরে ক্ষতিকারক গ্যাসসমূহের ব্যবহার কমাতে হবে।
৩. বৃক্ষ নিধন রােধ করতে হবে।
৪. পরিবেশ সহায়ক জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৫. কলকারখানার জ্বালানি সাশ্রয় করতে হবে এবং উৎপন্ন বর্জ্য বিশুদ্ধকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. দেশের জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
উপসংহার:
এই সুন্দর ধরণীকে রক্ষা করতে হলে, আগামী দিনের বাসযােগ্য করতে হলে আমাদের সবার সচেতন হওয়া দরকার । মানবজাতি একদিকে সভ্যতার চরম শিখরে আরােহণ করছে, আর অন্যদিকে বিপর্যত্রে সম্মুখীন করছে পৃথিবীকে। যার যার অবস্থান থেকে পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে সচেতন ও কৌশলগত ভাবে অবস্থানের মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশ সমূহকে এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে।