ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের এবং শাসকদের ঘৃন্য বর্বরতার ইতিহাস
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত ৪২০০টি ধর্ম রয়েছে। তার মধ্যে সনাতন, ইসলাম, খ্রিষ্টান এবং বৌদ্ধ এই চারটি ধর্মকে প্রধান বিবেচনা করা হয়। প্রতিটি রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্ম এবং ধর্মীয় প্রভাব অঙ্গাঙ্গীক ভাবে জড়িত রয়েছে।
ইসলামকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম বলা হয়ে থাকে। ২০১১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী ভারতে প্রায় সতের কোটি ২২ লক্ষ ইসলাম ধর্মের লোক বসবাস করে । যা মোট জন সংখ্যার ১৪.২৩% । ভারতীয় ইতিহাস , ঐতিহ্য ,শিল্প , সাহিত্য, সংগীত , স্থাপত্য ,রাজনীতি , অর্থনীতি ,খাদ্য অভ্যাস, পোশাক পরিচ্ছদ, সমাজ সহ সভ্যতার প্রতিটি দিকে ইসলাম ও মুসলমানের অবদান ভারতের আষ্টে পৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। ধর্ম, বর্ণ , বিভেদের বাধা দূরে ঠেলে দিয়ে ইসলাম ও মুসলমান হয়ে উঠেছে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ।
ভারতে ইসলাম ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলেই আরব , ইরান , টার্কিশ , আফগান , মধ্য এশিয়ান , হাবশী আফ্রিকান ,এবং তুর্কিশদের সাথে আসা ইউরোপিয়ানদের কথাও এসে পড়ে। এই বিষয় গুলি যেমন ভারত বর্ষের ঐতিহ্য কে বর্নিল করেছে তেমনি ভারতের হাজার বছরের ইতিহাসে বিভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে । ইতিহাস থেকেই জানা যায় সুদূর অতীত কাল থেকেই আরবের সাথে -ভারতের একটি বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ।
ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম দের যাত্রা শুরু হয় ১২শ থেকে ১৬শ শতাব্দীতে। তবে মুসলিমরা এই উপমহাদেশে প্রথম হামলা চালায় ৮ম শতাব্দীতে। তৎকালীন রাজপুত সাম্রাজ্যে (বর্তমান আফগানিস্তান ও পাকিস্তান) হামলা চালিয়ে দিল্লীর সালতানাত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই উপমহাদেশে ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরখন্ড, সিকিম, নেপাল, ভুটান, দক্ষিন ভারতের ট্রাভাঙ্কর, তামিলনাড়ু, এবং আসামের আহোমরাজ্য ছাড়া ভারতের বেশীর ভাগ অংশই তারা দখল করে নেয়।
মুঘল শাসনের ভিত
১০২৬ খৃষ্টাব্দে গজনীর সুলতান মাহমুদ আক্রমনের উদ্দেশ্যে তার ৩০ হাজার অশ্বারোহী ও বিশাল বাহিনী নিয়ে সোমনাথ মন্দিরের সামনে উপস্থিত হন। তার উদ্দেশ্য ছিল এই মন্দির ধ্বংস করা। কিন্তু চতুর্দিক থেকে বহু সংখ্যক রাজপুত যোদ্ধা ও রাজাগন সোমনাথ মন্দির রক্ষার্থে অগ্রসর হন এবং সুলতান মাহমুদ এর বিশাল সৈন্যকে বাঁধা প্রদান করে।এই যুদ্ধে প্রায় পাঁচ হাজার হিন্দু সোমনাথ মন্দির রক্ষার্থে প্রাণ বিসর্জন দেন।, কিন্তু মন্দির রক্ষা করা যায় না।
মন্দিরের পূজারী সহ বহু সংখ্যক নিরপরাধ ব্রাহ্মণ এবং পবিত্র সোমনাথ মন্দির অপবিত্র করে মন্দিরের সকল বিগ্রহাদি ভেঙে ফেলা হয়। প্রাচীন এই মন্দির এর গায়ে প্রচুর রত্ন খচিত ছিল। বর্বর মাহমুদ বাহিনী মন্দির এর দুই কোটি স্বর্ণমুদ্রা ও বিগ্রহের সমস্ত অলংকারাদি লুন্ঠন করে।
সুলতান মাহমুদের পর মোহাম্মদ ঘোরী মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে ভারত আক্রমণ করেন। মোহাম্মদ ঘোরী ভাতিন্দা আক্রমণের পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কালে ভারতবর্ষের শেষ হিন্দু রাজা পৃথ্বীরাজ তাকে ধাওয়া করেন। ধানেশ্বরের নিকট "তরাইন" নামক স্থানে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হয় যা ইতিহাসে তরাইনের যুদ্ধ নামে পরিচিত ।পৃথ্বীরাজের চতুর্দিক আক্রমনের ঘোরী দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং আহত হলেন ও বন্দী হলেন।
পৃথ্বীরাজ হিন্দু অনুশাসন মতে ঘোরীকে ক্ষমা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দেন আর এটিই ছিল ওনার সবচেয়ে বড় ভুল। পৃথ্বীরাজের এই ধর্মীয় অনুশাসন ই পৃথ্থি রাজ ও ভারতের হিন্দুদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়ে ছিল। উদার পৃথ্বিরাজ জানতেন না যে সনাতনীয় নীতি আর কোরানের নীতি কখনোই এক নয়। প্রথম তরাইনের যুদ্ধের পরের বছরই (১১৯২) কোরানের আদর্শ মতে মুহম্মদ ঘুরী প্রথম তরাইনের যুদ্ধের নীতি ভঙ্গ করে দ্বিতীয় বার আক্রমনের চালান এবং পৃথ্বিরাজকে হত্যা করেন যা ইতিহাসে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে নামে পরিচিত।
মুঘল শাসকদের কালো অধ্যায়
বর্তমানের এই ভারতবর্ষ প্রাচীন স্থাপত্যের এই অপূর্ব উদাহরণ ছিলো। কিন্তু মুসলিম শাসকদের বর্বরতা সেই স্থাপত্য গুলো কে ধব্বাংশ করে দিয়েছে। মুহম্মদ ঘুরীর নির্দেশে ভারতের একের পর এক ধব্বংশ করা হয়। স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন আজমীরের হিন্দু মন্দির মুহম্মদ ঘুরীর হাতেই ধ্বংশ হয়। তিনি মন্দিরটি ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ ও ইসলাম শিক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করেন।
এরপর মুহাম্মদ ঘুরী তার অভিযান চালনা করেন বেনারস ও দিল্লীতে। মুসলিম সালতানাত প্রতিষ্ঠার জন্য অসংখ্য হিন্দু কে তিনি নির্বিচারে হত্যা করেন। বিখ্যাত "অসান দুর্গ" দখল এর খুনের নেশায় উন্মাদ মুসলমানেরা নির্বিচারে হিন্দু হত্যা করতে করতে বেনারস পৌছায় এবং সেখানেও নির্বাচার গনহত্যা চালাতে থাকে।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক "হাসান নিজাম" তার ‘তাজ উল মাসির’ গ্রন্থে এই বর্বরতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, “ঘুরীর তরবারির ধার সমস্ত হিন্দুকে যেন নরকের আগুনে নিক্ষেপ করল।" তাদের কাটা মুন্ড দিয়ে আকাশ সমান উঁচু তিন খানা গম্বুজ নির্মাণ করা হল এবং মাথাহীন দেহগুলো যেন বন্য পশুর খাদ্যে পরিণত হল।” মুসলিম শাসকরা কতখানি বর্বর ছিল সেটা এখান থেকে সহজেই অনুমেয়।
এত রক্ত ঝরানোর পর ও মুসলিম দের হত্যার নেশা যেন শেষ হয় নি। ঘোরীর উত্তরসূরী কুতুবউদ্দিন আইবেক তার এক হাজার ঘোরসওয়ার বাহিনী নিয়ে কাশীর দিকে অগ্রসর হন। কাশী ছিল তখন সনাতনীদের অন্যতম পূন্যভূমি। ভারতবর্ষের বেদ অভিজ্ঞ পন্ডিতগন এই কাশীতেই থাকতো। কাশী নগরী দখল করার পর কুতুবউদ্দিন ও তার সঙ্গীরা প্রায় এক হাজার হিন্দু মন্দির ধ্বংস করল এবং সেই মন্দিরের ভিতের উপর মসজিদ নির্মান করেন।
ঐতিহাসিক হাসান নিজামী তার ‘তাজ উল মসির’ নামক গ্রন্থে এই ধ্বংস যজ্ঞের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন – “ইসলামের সেনারা সম্পূর্ণভাবে বিজয়ী হল। মূর্তি পুজার সমস্ত কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হল এবং সেখানে ইসলামের নিদর্শণ স্বরূপ মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মান করা হল।”
১১৯৭ খ্রিস্টাব্দ মুহাম্মদ কুতুবউদ্দিন ও মুহাম্মদ ঘোরী যৌথভাবে গুজরাট আক্রমণ করেন। যাওয়ার পথে তারা "নাহারয়োলা দুর্গ" আক্রমন করেন এবং মাউন্ট আবুর এক গিরিপথে রাজা "করন সিং" ও মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে করন সিং হেরে যান এবং মৃত্যুবরন করেন।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক মিনহাজ এই হত্যা যজ্ঞ সম্পর্কে বলেছেন - “প্রায় পঞ্চাশ হাজার শব দেহের স্তুপ পাহাড়ের সমান উচু হয়ে গেল। বিশ হাজারেরও বেশি ক্রীতদাস, কুড়িটি হাতি সহ এত লুটের মাল বিজয়ীদের হাতে এলো যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সমস্ত মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হল, ৫০ হাজার হিন্দুকে (নারী ও শিশু-সহ) ক্রীতদাস হিসেবে পাওয়া গেল এবং হিন্দুর রক্তে মাটি পীচের মত কালো হয়ে গেল।”
মুসলমানের হত্যাযজ্ঞে ভীত হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিল। মুসলিভ শাসকরা এই সব নও মুসলমানদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, "তারা যদি নিয়মিত নামাজ রোজা পালন করে তবে তাদেরকে উচ্চ রাজকর্মচারী পদে নিযুক্ত করা হবে। কিন্তু বর্বর মুসলিম শাসকরা তাদের কথা রাখে নি। তারা নওমুসলিমদের দিয়ে হিন্দু মন্দির ধ্বংস, হিন্দু হত্যা ও হিন্দু নির্যাতন করালে মুসলমানদের আচরণে বীতশ্রদ্ধ হতে থাকে।"
একসময় মুসলিম শাসকদের উপর বিরক্ত হয়ে তারা পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরে আসার উদ্যোগ নেন। এ সময় গুজরাট হতে ফিরবার পথে সম্রাট আলাউদ্দিনের আদেশে এক দিনে ২০ হাজার নও-মুসলিমকে হত্যা করা হয় যাতে তারা তাদের আসল ধর্মে ফিরে যেতে না পারে।
১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে আলাউদ্দিন চিতোর আক্রমন করেন। চিতোরের রাজা রাজপুত রানা রতন সিংহ বীরদর্পে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত পরাজিত ও বন্দি হলেন। রাজপুত বীর গোরাচাঁদ ও বাদল অসাধারণ বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করলেন কিন্তু বিশাল সুলতানী বাহিনীকে পরাজিত করা তাদের পক্ষে অসম্ভব ছিল। মুসলিম শাসকদের নারী লোলুপতা কথা চিতোর রানী পদ্মাবতী জানতেন। তাই নিজের এবং রাজমহলের অন্য নারীগণের সত্বীত্ব রক্ষায় তিনি "জহরব্রত" পালন করেন অর্থাৎ জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বিসর্জন দেন। এভাবে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে তারা তাদের নিজেদের মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়ে গনিমতের মাল হওয়া থেকে রক্ষা করেছিলেন।
কাজী মুগিস উদ্দিন এর মতে, "সম্রাট আলাউদ্দিন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায় অন্যায় বা নীতি আদর্শের কোন ধার ধারতেন না।" অর্থের প্রাচুর্য্য থাকলেই বিদ্রোহের মনোবৃত্তি ও সামর্থ্য জন্মে। এটি ছিল আলাউদ্দিনের বদ্ধ ধারনা। এজন্য তিনি ধনবান হিন্দুদের নানাভাবে শোষণ করা শুরো করে। হিন্দুদের নিকট হতে উৎপন্ন ফসলের অর্ধাংশ রাজস্ব হিসেবে আদায় শুরু করলেন এবং হিন্দু জনসাধারণের উপর এমন অসহনীয় করভার স্থাপন করলেন ।তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের ইসলামে দীক্ষিত করা ।
এই কার্যকলাপে খুশী হয়ে মিশরের জনৈক বিখ্যাত ইসলামী আইন বিশারদ আলাউদ্দিন খিলজীকে এক পত্রে লিখেছিলেন- “শুনলাম আপনি নাকি হিন্দুদের এমন অবস্থা করেছেন যে, তারা মুসলমানদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষাবৃত্তি করছে। এরূপ কাজ করে আপনি ইসলামের অশেষ উপকার করেছেন। একমাত্র এই কাজের জন্যই আপনার সকল পাপের মার্জনা হবে।”
এর পর ক্ষমতায় আসলেন ফিরোজ শাহ। তিনি ক্ষমতায় এসেই নবীজির আদর্শ অনুসরণ করে বিভিন্ন মন্দিরকে মসজিদে রুপান্তর করা শুরু করলেন। তিনিই পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ দেবের মূর্তিটি মুসলমানগণ দ্বারা পদদলিত করবার উদ্দেশ্যে দিল্লী নিয়ে গিয়েছিলেন এবং ১৩৬০ সালে জগন্নাথের পুনরায় তৈরী হওয়া বিগ্রহ সমুদ্রে ফেলে দেন।
এরপর ভারত আক্রমণ করেন তৈমুর লঙ। ‘দিল্লীর সুলতানগণ পৌত্তালিকতার উচ্ছেদ সাধন করছে না। তারা পৌত্তালিকদের প্রতি উদারতা প্রদর্শন করছে,’ এই অজুহাতে তিনি দিল্লী আক্রমন করলেন। দিল্লী অভিমুখে যাত্রাপথে অসংখ্য স্থান লুন্ঠন করে এবং অসংখ্য নর-নারীর প্রাণ নাশ করেন। সেখানে তিনি প্রায় এক লক্ষ হিন্দু বন্দীকে হত্যা করেন। দিল্লী পৌঁছানোর পর তার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে হিন্দু নাগরিকগণ আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে সেখানে এক ব্যাপক হত্যাকান্ড শুরু হয়।
তৈমুরের দুর্ধর্ষ বাহিনী অগনিত হিন্দু নর নারীর রক্তে দিল্লী নগরী রঞ্জিত করে এবং দিল্লী নগরীতে কয়েকদিন ধরে পৈশাচিক হত্যাকান্ড ও লুণ্ঠনের পরিচালনা করে। সিরি, জাহাপনা ও পুরাতন দিল্লী সহ আরো তিনটি শহরে অনুরূপ লুণ্ঠন ও হত্যাকান্ড ঘটায়। কথিত আছে যে, দিল্লী হত্যাকান্ড এমন পৌশাচিক এবং এত পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল যে, এই হত্যাকান্ডের পরবর্তী দু’মাস পর্যন্ত দিল্লীর আকাশে কোন পাখি উড়ে নাই।
ঐতিহাসিকদের মতে তৈমুর মোট এত মানুষ হত্যা করেছিলেন যা সেই সময়ের হিসাবে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৫-৭%। তৈমুর তার আত্মজীবনীতে বলেছেন- দিল্লিতে আমি ১৫ দিন ছিলাম। দিনগুলি বেশ সুখে ও আনন্দে কাটছিল। দরবার বসিয়েছি, বড় বড় ভোজ সভা দিয়েছি। তারপরেই মনে পড়ল কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেই আমার হিন্দুস্থানে আসা। খোদার দয়ায় আমি সর্বত্রই আশাতীত সাফল্য পেয়েছি। লক্ষ লক্ষ কাফের হিন্দু বধ করেছি। তাদের তপ্ত শোনিতে ধৌত হয়েছে ইসলামের পবিত্র তরবারি। তাই এখন আরাম-আয়েসের সময় নয় বরং কাফেরদের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ করা উচিৎ। ইসলাম এর বর্বরতার পরিচয় এখান থেকে খুব সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
এই হত্যকান্ড এত পৈশাচিক হয়েছিল যে, বিভিন্ন স্থানে মুসলমান রাজকর্মচারীরা হিন্দুদেরকে ইসলাম গ্রহন করতে নির্দেশ দেয় এবং নির্দেশ না মানলে তৈমুরের বাহিনীকে খবর দেওয়ার ভয় দেখানো শুরু হয়। পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার ভয়ার্ত মানুষ গুলো তখন দলে দলে মুসলমান হতে লাগল। বাংলায় প্রচলিত “শুনে মুসলমান” কথাটি এখান থেকেই প্রচলিত হয়।
মুসলমানদের মতে সিকান্দার শাহ ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক।তারই আদেশে মথুরার বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরটি ধুলিস্মাৎ করা হয়েছিল। তৎকালীন হিন্দুরা যমুনা নদীকে পবিত্র মনে করে সেই জলে স্নান করত। সিকান্দার শাহ্ যমুনা নদীতে হিন্দুদের স্নানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। জনৈক ব্রাহ্মণ “হিন্দু ধর্ম ইসলাম ধর্ম অপেক্ষা কোন অংশেই হীন নহে”- এই কথা বলার অপরাধে নির্মম ভাববে প্রাণ হারিয়েছিলেন।এভাবেই মোগলরা তরবারির জোরে তাদের সিংহাসন ধরে রেখেছিলেন। যার সমাপ্তি ঘটে ইংরেজ শাসনের মধ্য দিয়ে।
খুবই ভাল লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্য ইতিহাস তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।।