রচনা: বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা
রচনা: বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা
(সংকেত: ভূমিকা–বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব–বিজ্ঞান শিক্ষার বিভিন্ন দিক–বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞান শিক্ষা- উপসংহার)
ভূমিকা: বিজ্ঞান মানে বিশেষ জ্ঞান। সভ্যতার আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞানের কল্যাণের কথা অস্বীকার করার কোনাে উপায় নেই। বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে স্বতি। সুদূর প্রাচীনকালের দিকে যদি তাকাই, দেখা যাবে বিজ্ঞানের কল্যাণ আমাদের চলমান জীবনে কত বিস্তৃত। বিজ্ঞানের উন্নতিতে আজ বিশ্বজগৎ চমকৃত। বিজ্ঞান মানুষের ঐকান্তিক নিরবচ্ছিন্ন সাধনার সুফল। বিজ্ঞান মানুষের আঁধার ঘেরা চলার পথের অনির্বাণ আলােকবর্তিকা। যতই দিন যাচ্ছে মানুষের নিরস্ত্র প্রয়ােজন মেটানাের জন্য বিজ্ঞান আরাে সৃষ্টি মুখর হয়ে উঠছে। এতে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব ক্রমে বাড়ছে। বিষয় বৈচিত্র্যের মধ্যে প্রয়ােজনীয়তা ও তাৎপর্য বিবেচনা করলে অপরাপর বিষয়ের চেয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার যে গুরুত্ব সর্বাধিক তা অস্বীকার করার কোনাে উপায় নেই।
বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব: বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপরিসীম। কেননা মানুষ শিক্ষা অর্জন করে এ পৃথিবীকে কিছু দেবার জন্য। বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মানবকল্যাণে সর্বাধিক অবদান রাখতে পারে। মানুষের স্বভাবতই আগ্রহ থাকে অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার। এ কৌতূহল একমাত্র বিজ্ঞানই মেটাতে পারে। বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের অতীত আবিষ্কার সম্পর্কে যে ধারণা পায় এবং বর্তমানে বিজ্ঞানের যেসব অবদান লক্ষ করে তার সমন্বয় ঘটিয়ে সহজেই নিজস্ব চিন্তাশক্তির উন্মেষ ঘটাতে পারে । নিচে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে মতামত উপস্থাপন করা হলাে :
ক) কৃষিখাত এবং বিজ্ঞান : বর্তমান সময়ে কৃষিখাত বিজ্ঞাননির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রাচীন পদ্ধতিতে চাষাবাদ ব্যবস্থার পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। বিজ্ঞান শিক্ষার ফলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করা যায়।
খ) শিল্পখাত এবং বিজ্ঞান: শিল্প-কারখানা এবং বিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। বর্তমান শিল্প-কারখানার বেশির ভাগই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত। তাছাড়া শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিজ্ঞানের গবেষণার ফসল । তাই বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর শিল্প খাতের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল।
গ) চিকিৎসাখাত এবং বিজ্ঞান: চিকিৎসাখাত পুরােটাই বিজ্ঞাননির্ভর। চিকিৎসাখাতের বিভিন্ন উদ্ভাবন বর্তমান সভ্যতাকে দিয়েছে অনেক সফলতা। বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জন করা যায় ।
এছাড়া বিজ্ঞান শিক্ষা বর্তমান সময়ের সবকিছুতেই অতি প্রয়ােজনীয় বিষয় বিবেচিত হওয়ায় এর গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞান এতটাই তার হাত প্রসারিত করে চলেছে যে, বর্তমান বিশ্ববাণিজ্য এবং অর্থনীতিও আজ বিজ্ঞান দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
বিজ্ঞান শিক্ষার বিভিন্ন দিক: বিজ্ঞান শিক্ষার পথ যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। স্কুল থেকে শিক্ষা শুরু করে ক্রমশ একজন শিক্ষার্থী উচ্চস্তরে প্রবেশ করে। উচ্চস্তরে বিজ্ঞান শিক্ষার রয়েছে বিশাল আয়ােজন। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বিদ্যা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা থেকে শুরু করে চিকিৎসা বিদ্যা, প্রকৌশল বিদ্যা, কারিগরি বিদ্যা, কৃষি বিদ্যা, মহাকাশ বিদ্যা, কম্পিউটার বিদ্যা তথা বহুবিধ বিষয়ে বিজ্ঞান খুলে দিয়েছে শিক্ষার দ্বার। নিজের শিক্ষাকে যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এ পৃথিবীকে কিছু দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকল্প নেই। সুতরাং শিক্ষার্থীর কাছে পাঠের বিষয় হিসেবে বিজ্ঞান লােভনীয় বিবেচিত হওয়াই স্বাভাবিক।
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা: শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করে এ কথা সত্য । শিক্ষা মানুষের মনের দরজা খুলে দেয়, তার জ্ঞানকে বাড়িয়ে তােলে। কিন্তু এতেই শিক্ষার প্রয়ােজন ফুরিয়ে যায় না। শিক্ষা অবশ্যই জীবনমুখী, বাস্তবধর্মী এবং পেশাভিত্তিক হতে হবে। আর বিজ্ঞান শিক্ষার মধ্যেই এসব সর্বাধিক পাওয়া সম্ভব। এক কথায় বিজ্ঞান শিক্ষা বর্তমানের সাথে ভবিষ্যতের যােগসূত্র স্বরূপ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞান শিক্ষা : ১৯৯৮ সালে এক বেসরকারি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীর হার ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের । কেননা, এমনিতেই আমাদের অবস্থান দারিদ্র্য সীমার নিচে। বিশ্ব যখন চলছে বিজ্ঞানের দিকে, আমরা তখন বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি বিমুখ। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। গবেষণায় আরাে দেখা যায়, বিজ্ঞান শিক্ষা এদেশে পাঠ্য বইকেন্দ্রিক হওয়ায় এবং উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা এ শিক্ষায় আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রকৃত গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উপসংহার: বিজ্ঞান মানুষকে কুসংস্কারমুক্ত করে তাকে দাঁড় করায় বাস্তবতার মুখােমুখি। প্রমাণ ছাড়া বিজ্ঞান কোনাে কিছুতে বিশ্বাস করে। বিজ্ঞান এ সমাজকে উপহার দিয়েছে জীবনযাপনের গুরুত্বপূর্ণ সবকিছু। দৈনন্দিন জীবন এখন বিজ্ঞানের খাঁচায় বন্দি। এসব কিছু অনুধাবন করে আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষা লাভের জন্য আগ্রহী হওয়া দরকার। কেননা বিজ্ঞান মানেই অতীতের বারান্দায় বসে বর্তমানকে ভালােবেসে ভবিষ্যতের জন্য কিছু করে যাওয়া ।
বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুচ্ছেদ
বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব রচনা
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রচনা
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুচ্ছেদ
বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব রচনা
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রচনা
ক) কৃষিখাত এবং বিজ্ঞান : বর্তমান সময়ে কৃষিখাত বিজ্ঞাননির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রাচীন পদ্ধতিতে চাষাবাদ ব্যবস্থার পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। বিজ্ঞান শিক্ষার ফলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করা যায়।
খ) শিল্পখাত এবং বিজ্ঞান: শিল্প-কারখানা এবং বিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। বর্তমান শিল্প-কারখানার বেশির ভাগই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত। তাছাড়া শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিজ্ঞানের গবেষণার ফসল । তাই বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর শিল্প খাতের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল।
গ) চিকিৎসাখাত এবং বিজ্ঞান: চিকিৎসাখাত পুরােটাই বিজ্ঞাননির্ভর। চিকিৎসাখাতের বিভিন্ন উদ্ভাবন বর্তমান সভ্যতাকে দিয়েছে অনেক সফলতা। বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জন করা যায় ।
বিজ্ঞান শিক্ষার বিভিন্ন দিক: বিজ্ঞান শিক্ষার পথ যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। স্কুল থেকে শিক্ষা শুরু করে ক্রমশ একজন শিক্ষার্থী উচ্চস্তরে প্রবেশ করে। উচ্চস্তরে বিজ্ঞান শিক্ষার রয়েছে বিশাল আয়ােজন। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বিদ্যা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা থেকে শুরু করে চিকিৎসা বিদ্যা, প্রকৌশল বিদ্যা, কারিগরি বিদ্যা, কৃষি বিদ্যা, মহাকাশ বিদ্যা, কম্পিউটার বিদ্যা তথা বহুবিধ বিষয়ে বিজ্ঞান খুলে দিয়েছে শিক্ষার দ্বার। নিজের শিক্ষাকে যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এ পৃথিবীকে কিছু দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকল্প নেই। সুতরাং শিক্ষার্থীর কাছে পাঠের বিষয় হিসেবে বিজ্ঞান লােভনীয় বিবেচিত হওয়াই স্বাভাবিক।
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা: শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করে এ কথা সত্য । শিক্ষা মানুষের মনের দরজা খুলে দেয়, তার জ্ঞানকে বাড়িয়ে তােলে। কিন্তু এতেই শিক্ষার প্রয়ােজন ফুরিয়ে যায় না। শিক্ষা অবশ্যই জীবনমুখী, বাস্তবধর্মী এবং পেশাভিত্তিক হতে হবে। আর বিজ্ঞান শিক্ষার মধ্যেই এসব সর্বাধিক পাওয়া সম্ভব। এক কথায় বিজ্ঞান শিক্ষা বর্তমানের সাথে ভবিষ্যতের যােগসূত্র স্বরূপ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞান শিক্ষা : ১৯৯৮ সালে এক বেসরকারি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীর হার ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের । কেননা, এমনিতেই আমাদের অবস্থান দারিদ্র্য সীমার নিচে। বিশ্ব যখন চলছে বিজ্ঞানের দিকে, আমরা তখন বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি বিমুখ। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। গবেষণায় আরাে দেখা যায়, বিজ্ঞান শিক্ষা এদেশে পাঠ্য বইকেন্দ্রিক হওয়ায় এবং উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা এ শিক্ষায় আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রকৃত গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উপসংহার: বিজ্ঞান মানুষকে কুসংস্কারমুক্ত করে তাকে দাঁড় করায় বাস্তবতার মুখােমুখি। প্রমাণ ছাড়া বিজ্ঞান কোনাে কিছুতে বিশ্বাস করে। বিজ্ঞান এ সমাজকে উপহার দিয়েছে জীবনযাপনের গুরুত্বপূর্ণ সবকিছু। দৈনন্দিন জীবন এখন বিজ্ঞানের খাঁচায় বন্দি। এসব কিছু অনুধাবন করে আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষা লাভের জন্য আগ্রহী হওয়া দরকার। কেননা বিজ্ঞান মানেই অতীতের বারান্দায় বসে বর্তমানকে ভালােবেসে ভবিষ্যতের জন্য কিছু করে যাওয়া ।