সফল ব্লগাররা কেন অন্যদের সাহায্য করতে চায় না? এবং নতুনদের জন্য কিছু পরামর্শ

একজন ব্লগার হিসেবে আপনি সফল হোন বা শুরুর পর্যায়ে থাকুন না কেন আপনি কেন একজন নতুন ব্লগার কে সহযোগীতা করবেন? আমাদের দেশে অনেক সফল ব্লগার রয়েছে যারা ব্লগিংয়ের দিক থেকে সফল এবং প্রচুর আয়ও করেন তারা। কিন্তু তাদের ৯৯% ব্লগারের মাঝেই একটি কমন জিনিস দেখা যায় যে তারা নতুনদের সহযোগিতা করতে চায় না। এর পিছনে কতগুলো কারন কাজ করে। আমরা সকলেই সবসময় বলে থাকি আসলে তারা চায় না সহযোগিতা করতে কারন যাতে অন্য কেউ সফল হতে পারে! এবং অপরের সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়। কিন্তু বিষয়টি সকল ক্ষেত্রে আসলেই তাই? যারা সহযোগিতা চাচ্ছে তাদের কি কোনই সমস্যা নেই? আসুন তাহলে আমার এই স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে একটু পর্যবেক্ষণ করি সমস্যাটি আসলে কোথায়।

প্রথমেই বলে রাখি আমি নিজেকে সফল ব্লগার মনে করি না। এবং আসলেই আমি এখন পর্যন্ত সফলতার দারপ্রান্তে পৌঁছাতেও পারিনি। তবে মনের তিব্র ইচ্ছে আছে সফলতার স্বাদ গ্রহন করার। কতটুকু সফলতা অর্জন করতে পারবো তা ভাগ্যই নির্ধারণ করুক। তবে পরিশ্রম চালিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য! যাই হোক মূল কথায় আসা যাক। একজন সফল ব্লগার অবশ্যই নিঃসন্দেহে প্রচুর পরিমাণ পরিশ্রম করেছেন তার সফলতা অর্জন করতে এবং প্রচুর পরিমাণ পরিশ্রম করে যাচ্ছে সফলতাকে ধরে রাখতে। কারন আমরা সকলেই জানি, "সফলতার অর্জনের  কোন শর্টকাট নেই"


এ কারনে প্রতিনিয়ত তাকে তার ব্লগের জন্য আর্টিকেল লিখতে হয়৷ এবং নতুন নতুন আর্টিকেল আইডিয়া জেনারেট করতে তার ব্রেনকে প্রচুর পরিমাণ চাপ প্রয়োগ করতে হয়। এরপরে মার্কেটিং এবং ম্যানেজমেন্ট এর কত গুলো কাজ থাকে সফল ভাবে এগিয়ে যেতে। তার জন্য তাকে দিনের বেশিরভাগ সময় কাজ করতে হয়। এরপরে যখন আমরা জানতে পারি অমুক ভাই একজন সফল ব্লগার তখন আমরা সকলেই চাই তার থেকে পরামর্শ নিতে যাতে করে আমরাও সফলতা অর্জন করতে পারি। এবং আমরা মনে করি তার কাছে এমন কোন শর্টকাট টেকনিক আছে যার মাধ্যমে আমরাও সফল হতে পারবো। তাই আমরা চাই তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে!      


তবে এখানে পরামর্শ চাওয়াটা কিন্তু দোষের কিছু নয়। তাহলে আমরা পরামর্শ চাইলে কেন তারা এমন বিরক্ত বোধ করে? এবং সহযোগিতা করতে কেন চায় না! এখানেই আসল ঘটনা! আসলে আমি বা আপনি যাকে সফল ব্লগার হিসেবেই চিনেছি তাকে কি অন্য কেউ চিনেনাই এখনো? অবশ্যই তার সমন্ধে আরো অনেকেই জানে। তাই আপনি যখন তাকে সহযোগিতার জন্য টেক্সট করলেন অন্যরাও কিন্তু টেক্সট করছে। ধরুন এভাবে যখন তাকে দিনে কত গুলো  প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় তখন  তার কেমন লাগে। হয়তো সে ৩-৪ ঘন্টা কাজ করে একটু রিলাক্স করার সময় ফেসবুকে এসেছে বা কোন কাজে এসেছে তখনই শুরু হয়ে যায় প্রশ্নের ঝড় তাহলে একটু রাগান্বিত হওয়া কি আসলেই স্বাভাবিক নয়?


তাহলে কি তার কাছে আমরা প্রশ্ন করতে পারবো না? আমাদের প্রশ্ন করা ভুল ছিল?  না আমাদের মত নতুনদের ও প্রশ্ন করার যায়গায় কোন ভূল নেই। কিন্তু ভুলটা অন্য যায়গায়। আমরা তাদের কাছে এমন কত গুলো প্রশ্ন করি যা আসলেই অযৌক্তিক। এবং যেগুলো প্রশ্নের উত্তর আমরা একটু কষ্ট করলেই খুজে বের করতে পারতাম। কিন্তু তা আমরা করি না, তার বদলে আমরা ভাবি অমুক ভাই আছেন তাকে প্রশ্ন করলেই উত্তর খুজে পাবো। হয়তো প্রশ্নটি নিতান্তই একটি সাধারণ জিনিস। এভাবেই প্রশ্ন করতে করতে একসময় যখন দেখা যায় কখনো প্রশ্নের উত্তর দিতে দেরি হয়ে যায় তখন বা সে বিরক্ত হয়ে যায় তখন তাকে  বিভিন্ন কথার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, অমুক ভাইয়ের অনেক অহংকার হেল্প চাইলে হেল্প করে না। মেসেজ দিলে রিপ্লাই দেয় না আরো কতো কি। তখন সে সিদ্ধান্ত নেয় কাওকেই আর হেল্প করবে না। এছাড়াও অনেক গুলো কারন থাকে যেগুলো আপনিও একটু উপলব্ধি করার চেষ্টা করলেও বুঝতে পারবেন।


তাহলে কি এ সমস্যার সমাধান কি? আসুন একটু আলোচনা করি সমাধানের পথ খুজে বের করতে।


একজন নতুন ব্লগারের করনীয় কি এবং হেল্প চাওয়ার ক্ষেত্রে যেসকল বিষয় মাথায় রাখতে হবে: নতুন ব্লগিং শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে আপনি ব্লগিং করবেন কি না। যদি আপনার চিন্তা "হ্যা" সূচক হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ কি? একটি ব্লগ তৈরি করা!  না ব্লগ তৈরি নয়। জানতে হবে ব্লগিংয়ের বেসিক ধারনা গুলো সম্পর্কে। যেখানে থেকে ধারনা নিবেন কিভাবে আর্টিকেল রাইটিং করতে হয়। কিভাবে ব্লগ পরিচালনা করতে হবে। কিভাবে একটি ব্লগ খুলতে হবে। কিভাবে আয় করবেন ব্লগ থেকে বা কি পরিমাণ আয় করা সম্ভব ইত্যাদি ইত্যাদি। যেসকল প্রশ্নের উত্তর ইউটিউব বা গুগল করলে হাজারো কন্টেন্ট পেয়ে যাবেন।


এসকল কন্টেন্ট থেকে ধারনা অর্জনের পরে অবশ্যই অনেক কিছু যানতে পারবেন৷ এবং এসকল কিছু জানার মাঝ থেকে অনেক প্রশ্ন উঠে আসবে আপনার মনে। আবার সেসকল বিষয় নিয়ে অমুক তমুক সমুক বড় ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন না করে সরাসরি গুগল বড় ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন করুন। দেখবেন গুগল বড় ভাই আপনাকে হাজার হাজার উত্তর এনে দিয়েছে। এর থেকে পছন্দসই একটি উত্তর দেখুন। এবং দেখুন সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। এবং উত্তর গুলো হবে বিস্তারিত। কারন এখানে বড় ভাইরা চিন্তা করে রাখছে কিভাবে ছোট ভাইদের সবচেয়ে বেশি তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা সম্ভব!


তাহলে এর থেকে আমরা আমাদের প্রশ্নগুলো খোজার একটি নির্ভরযোগ্য উপায় পেয়ে গেলাম। তাহলে কি সেই অমুক বড় ভাইকে প্রশ্ন করবো না? অবশ্যই করবো। কারন এর ভিতর থেকেও কিছু প্রশ্ন থেকে যাবে যা ইউটিউব বা গুগলের মাধ্যমে সঠিক ভাবে জানতে পারি নাই। এরফলে অবশ্যই আমাদের প্রশ্নগুলো যুক্তিযুক্ত হবে৷ এবং এই প্রশ্নটি তার কাছে জানতে চান যে ভাই বিষয়টা ঠিক বুঝছিনা। তখন দেখতে পাবেন সে যথা সম্ভব সাহায্যের চেষ্টা করছি এবং সেই বিষয়টি তার জানা না থাকলে সেই নির্ভরযোগ্য মাধ্যম খুঁজেও দিবে আপনাকে। কারন আপনার প্রশ্নটি সত্যিকার অর্থে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।


সর্বোপরি নতুনদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা তা হলো, যারা নতুন ব্লগিং বা ইউটিউবার হতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজেই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। এবং অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কোন সমস্যার সমাধান খুজতে গিয়ে আরো নতুন কিছু জানতে পারবেন। এবং গুগল বা ইউটিউবে সমাধান পাবেন না এমন সমস্যা লাখে ২-১ টাই আছে। সেই ২-১ টা সমাধান অভিজ্ঞদের থেকে নিন। এছাড়া এসকল সমস্যা সমাধানের জন্য হাজারো কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হাজারো কন্টেন্ট তৈরি করে রাখছে। আপনি এগুলো খুজলে যেমন আপনি লাভবান হবেন এবং এতে করে সেই কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাও লাভবান হবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url