ফেসবুক পেইজ এবং পোস্ট বুস্ট কি কিভাবে করবো এবং সফলতা অর্জনের উপায়
আমার ব্যাবসায় বা বিভিন্ন কারনে ফেসবুক পেইজ (Facebook Page) খুলে থাকি। তবে সফল হতে হলে পেইজে প্রচুর পরিমানে লাইক দরকার।এবং ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার উপায় হলো প্রচুর পরিমাণ মানুষের কাছে পেইজটি পৌছে দেওয়া। আর এর জন্য ফেসবুক পেজ প্রমোট করতে হয় যা ফেসবুক বুস্টিং (Facebook Boosting) নামে পরিচিত। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর আনা সম্ভব ফেসবুক পেইজে। ফেসবুক বুস্টিং বা বুস্ট এর মাধ্যমে পেইজটিকে খুব সহজেই আমরা জনপ্রিয় করতে পারি। এবং ফেসবুক পেইজ বুষ্ট করে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসা (Business) সফল করতে পারবেন। আপনি চাইলে বিকাশের মাধ্যমে ফেসবুক বুস্ট করতে পারবেন। বিকাশ দিয়ে পেজ প্রমোট করতে আপনাকে বিশ্বস্ত সার্ভিস প্রোভাইডারের অাশ্রয় নিতে হবে!
ফেসবুক বুস্ট পোস্ট কি (what is facebook boost Post)?
আমরা অনেকেই ফেসবুক পেইজ বুষ্ট সম্পর্কে পরিচিত। আবার অনেকেই জানেন না ফেইসবুক পেজ বু্স্ট কি। ফেসবুক পেইজ বুষ্ট হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যাবসাকে সবার কাছে পরিচিত করে তুলতে পারি এবং এটি একটি সহজ এবং কার্যকর উপায়। এটি মূলত ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া। আমরা বিভিন্ন ওয়েব সাইট ভিজিট করতে সময় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখি থাকি। কিন্তু ফেসবুকের বিজ্ঞাপন গুলো একটু ভিন্ন প্রক্রিয়ার হয়ে থাকে। এর ফলে একটি সাধারণ ব্যাবহারকারী সকল সময়ই বিজ্ঞাপন এর সম্মুখীন হয়। কিন্তু এটি সে ঝামেলা যুক্ত এডস মনে না করে তার প্রতি আরো আকৃষ্ট হয়। ফেসবুক এসকল বিজ্ঞাপন গুলো এমন ভাবে উপস্থাপন করা হয় গ্রাহকদের কাছে যার ফলে গ্রাহক সহজেই সার্ভিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়।ফেসবুকে এসকল বিজ্ঞাপন ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ফেসবুক পেইজ সকলেই খুলতে পারে। কিন্তু পেইজকে জনপ্রিয় করতে হলে টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন প্রদান করতে হয়। এর ফলে একটি পেইজ সকলের কাছে অটোমেটিক (Automatic) ভাবে পৌঁছে যায়। এবং আমরা জানি ব্যাবসায়ের ক্ষেত্রে প্রচারেই প্রসার। আর প্রচারের ক্ষেত্রে ফেসবুক হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ! কারন এটি সহজ এবং ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রদান করার মাধ্যমে খুব সহজেই গ্রহকের সাথেও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব।
কিভাবে ফেসবুক পেজ প্রমোট বা বুস্ট করতে হয় (How to promote Facebook page):
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিন এবং ফেসবুক পেজের লাইক বাড়িয়ে নিন! বুস্ট বা প্রোমোট করা হচ্ছে ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার উপায়। কিন্তু আমাদের মনে যে প্রশ্নটি আসে তা হলো ফেসবুকে বিজ্ঞাপন খরচ কেমন। এই প্রশ্নের উত্তর ক্ষেত্র বিশেষ ভিন্ন তবে আপনি সর্বনিম্ন দৈনিক ১ ডলারের বিনিময়ে ফেসবুক পেইজ বুস্ট করতে পারেন। এতে করে আপনার পেইজ রিচ হবে দৈনিক ৮০০-১০০০ এবং পেইজে ১০০ এর মত লাইক পাবেন। এছাড়াও আপনি এর থেকে বেশি অর্থ ব্যায় করেও বিজ্ঞাপন প্রদান করতে পারেন এতে আপনার পেইজের ভিজিটর ও লাইক বেশি আসবে।
এছাড়াও এর জন্য আপনার একটি ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে (International Payment Gateway) অর্থাৎ ডুয়েল কারেন্সি মাস্টারকার্ড (Dual Currency MasterCard) দরকার পড়বে বিজ্ঞাপনের অর্থ পরিশোধ করতে। কারন ফেসবুক যেহেতু একটি বিদেশি কোম্পানি তাই আমাদের দেশিয় পেমেন্ট মেথড ( Payment Method) কাজ করবে না।
কিন্তু আপনার যদি এটি না থাকে তাহলে চিন্তার কারন নেই কারন আমাদের দেশে রয়েছে বিভিন্ন সার্ভিস প্রোভাইডার যাদের মাধ্যমে বিকাশে পেমেন্ট করেই আপনি আপনার পোস্টটি বুস্ট করে নিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে একটি ফেসবুক এড একাউন্ট থাকতে হবে। তবে স্বাভাবিক ভাবেও আপনি সরাসরি ফেসবুক এপস থেকেও বুস্ট করতে পারবেন।
তবে এখানে আপনাকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আপনি পেইজে লাইক চান অর্থাৎ আপনার যে পেইজটিকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান নাকি পেইজের কোন পোস্টে লাইক চান অর্থাৎ সবার কাছে সেই বিশেষ কোন পোস্ট শেয়ার করতে চান। পেইজের পোস্ট সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান তাহলে ফেসবুক পেইজের পোস্ট বুস্ট করতে হবে। কিন্তু পেইজ বুস্ট করলে আপনার পেইজ কেউ ফলো করলে আজিবন তার কাছে আপনার পেইজের পোস্ট পৌছাবে।
কিন্তু বুস্ট করলেই কি আপনি ব্যাবসায় সফল হতে পারবেন? অবশ্যই না কারন সঠিক কাস্টমারের নিকট পৌঁছাতে না পারলে কখনোই সেল আসবে না পেইজ থেকে!
তবে কিভাবে সহজেই আপনার টার্গেট কাস্টমারের নিকট পৌছাবেন (How to easily reach your target customer):
ব্যাবসায়ের ক্ষেত্রে টার্গেট কাস্টমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যদি টার্গেট কাস্টমার নির্বাচন করতে ভূল করেন তাহলে আপনার ব্যবসা সফল হবে না। এবং বিজ্ঞাপনের সকল অর্থই আপনার জলে গেল। তাই জেনে বুঝো সিদ্ধান্ত নেওয়া এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ স্বরূপ: ধরুন আপনার একটি ছেলেদের টিশার্ট বিক্রির পেইজ রয়েছে। আপনি শুধু ঢাকার ভিতরে টিশার্ট বিক্রি করেন। এর বাইরে বিক্রি করেন না।
এবার ভাবুন টিশার্ট কারা পড়ে? নিশ্চয়ই ছেলেরা টিশার্ট পড়ে। যদিও মেয়েরা পড়লেও আপনি মেয়েদের টিশার্ট বিক্রি করেন না। তাহলে আপনার প্রথম টার্গেট কাস্টমার হলো পুরুষরা।
এবার ভাবুন টিশার্ট কোন বয়সের পুরুষরা পড়ে? নিশ্চই ৫৫-৬৬ বছরের পুরুষরা পরে না বা পরলেও খুবই কম সংখ্যক লোকই পড়ে কিন্তু তারা অনলাইন শপিং করার ক্ষেত্রে আগ্রহী নয়। সাধারন ভাবে ১৫-৩০ বছরের মধ্যের পুরুষরাই বেশি পড়ে টিশার্ট। তাহলে আপনার কাস্টমারের বয়স হলো ১৫-৩০ বছর।
এবার আপনি শুধু মাত্র ঢাকার ভিতরে টিশার্ট বিক্রি করেন! তাহলে কেউ যদি গোপালগঞ্জে থেকে অর্ডার করে আপনি কি তার কাছে বিক্রি করবেন?না করবেন না কারন আপনি শুধু ঢাকার ভিতরেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। তাহলে আপনার টার্গেট লোকেশন হবে ঢাকা।
তাহলে আপনার কাস্টমারদের ভিতরে কোন জিনিস গুলো থাকতে হবে?
প্রথমে আপনার কাস্টমার হলো পুরুষ। এরপরে আসে তাদের বয়স হবে ১৫-৩০ বছর। এবং তাদের ঢাকার ভিতরে থাকতে হবে।
আর এই সকল বিষয় গুলো যাদের মধ্যে আছে তারাই আপনার কাস্টমার অন্যরা নয়। আপনি এসকল বিষয় নির্বাচন করে ফেসবুক পেইজ বুষ্ট করার ফলে আপনার ব্যবসা সফল হওয়ার আশঙ্কা অনেকগুন বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কারন এসকল কিছুর বাইরে পোস্ট করলে সেটা অপচয় হবে। কারন লাভবান হওয়ার কোন সুযোগ নেই সেখান থেকে!
এর থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি ফেসবুক বুষ্ট করা এবং সফল হওয়া নির্ভর করে আপনার ফেসবুক পেইজ বুষ্ট করার অভিজ্ঞতার উপর। এ কারনে পেইজ বুস্ট বা পোস্ট বুস্ট করার আগে ভালো ভাবে বুঝে নিন সকল বিষয় গুলো। এছাড়াও আপনি কোন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডিজিটাল মার্কেটারের সাহায্য নিতে পারেন।