করোনা ভাইরাস বা Covid-19 কি এর উৎপত্তির ইতিহাস এবং লক্ষণ ও প্রতিকার
নভেল করোনা ভাইরাস (Novel Corona Virus)। বর্তমান বিশ্বের কাছে এটি একটি আতঙ্কের নাম।কয়েকদিন আগেও যে virus টি আমাদের কাছে ছিল অজানা অচেনা বর্তমানে সেই virus টি ই আমাদের দুশ্চিন্তার কারন হয়ে উঠেছে। কেড়ে নিয়েছে আমাদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন।
করোনা ভাইরাস যার পোশাকি নাম Novel Corona Virus বা কোভিড -১৯ (Covid-19) এই virus টির জন্ম মূলত চীনের উহান শহরে। গত 2020 সালের শেষের দিকে এটি সামান্য ছড়িয়ে পরে এবং 2021 সালের February এবং March মাসের মাঝামাঝি সময়ে এটি চূড়ান্ত ভাবে আত্মপ্রকাশ করে।করোনা ভাইরাস বা Covid-19 কি?
Corona virus হল এমন একটি virus যা মানুষের শ্বাসতন্ত্রে আক্রমন করে থাকে। প্রথমে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন এটি খুবই ছোট এবং সাধারন একটি Virus কিন্তু পরবর্তীতে তাদের এই ধারনা ভুল প্রমাণিত হয়।
Covid-19 যথেষ্ট বড় একটি virus. ফলে এটি সরাসরি মানুষের শ্বাসতন্ত্রে যায় না। এটি প্রধানত আমদের T-zone অর্থাৎ চোখ, নাক এবং মুখেরমুখের মাধ্যমে আমাদের শ্বাসতন্ত্রে যায়। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা 1,009,315 এবং মৃত্যুর সংখ্যা 16,189জন। পুরো বিশ্বে আক্রান্ত 187,263,125 জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা 4,042,632 (তথ্যসূত্র-worldometer)
বিজ্ঞানীদের মতে এই Virus এর অনেক গুলো প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র 6টি প্রজাতি মানবদেহে রোগ তৈরী করতে সক্ষম। 2002 সালে সমগ্র China এই Corona virus এর একটি প্রজাতি দ্বারা আক্রান্ত হয়। এর ফলে প্রায় 774 জনের মৃত্যু এবং 8098 জন সংক্রমিত হয়েছিল।
কোভিড -১৯ (Covid-19) এর উৎপত্তি:
মূলত চীনের Wuhan প্রদেশ এই virus এর জন্মস্থল। অনেকে দাবি করে থাকেন Wuhan এর এক গোপন laboratory তে এই virus তৈরি করা হয় এবং কোনো একজন গবেষকের অসাবধানতার ফলে এই virus টি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও চীন এই দাবি তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে।
অনেকে মনে করে থাকেন এই virus কোনো প্রাণীর থেকে এসেছে। Wuhan এর একটি মাছের বাজার থেকে প্রথম এই Virus এর সংক্রমণ হয়। বিজ্ঞানীদের মতে বেলুগা তিমি, খরগোশ, মুরগি, সাপ ইত্যাদি প্রানী থেকে এ virus ছড়িয়ে থাকতে পারে।
বাদুরের সাথে ও এই Virus এর কিছুটা সম্পর্ক পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া ও বনরুই যাকে Chinese রা pangolin বলে থাকে, এর সাথে ও এই Virus এর সম্পর্ক পেয়েছে বিজ্ঞানীরা।
করোনা ভাইরাস বা Covid-19 এর লক্ষন:
Novel virus এর লক্ষন গুলো অন্যান্য সাধারন জ্বর এর মতোই। যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি এই লক্ষন গুলোকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না , আর এটাই Corona virus এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করার প্রধান কারন। এটি অনেকটা Surse virus এর মত।এটি মানুষের শ্বাসতন্ত্রে গিয়ে আঘাত করে ফলে সময় মত চিকিৎসা না হলে রোগী শ্বাসকষ্টে মারা যায়।
এই virus এর প্রাথমিক উপসর্গ হল শুষ্ক কাশি ও জ্বর। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে মাংসপেশীর ব্যাথা এবং শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। এই Virus এর লক্ষন গুলো অন্যান্য সাধারন ফ্লু মত হওয়ার কারনে Doctor রা ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর এক জরিপে দেখা যায়,
- 6% মানুষ এই Virus এ আক্রান্ত হওয়ার কারনে ফুসফুস বিকল হওয়া, সেপটিক শক এমনকি মৃত্যুর সম্ভাবনা তৈরী হয়।
- 14% এর মধ্যে এই উপসর্গের লক্ষন গুলো চরম ভাবে দেখা দেয়।
- 80% এর মধ্যে এই virus এর লক্ষন গুলো হালকা প্রকাশ করে।
সাধারনত শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী থাকে । কারন এসব রোগীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কম থাকে। যার ফলে সহজেই আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশে করোনা (Corona) পরিস্থিতি:
অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও Corona virus প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। গত 17March থেকেই দেশে জরুরি ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশের মানুষ যাতে Corona virus দ্বারা আক্রান্ত না হয় সেজন্য "no musk,no service" ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , শপিং মল, কারখানা , অফিস জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তবে দুঃখের বিষয় হল এত ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও কিছু মানুষের অসাবধানতার কারনে এই Covid-19 ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মারা গেছে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। যদিও বর্তমানে মানুষের মধ্যে এখন অনেক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। Quarantine জারি করার প্রথম দিকে অনেকেই এই quarantine মেনে চলার ব্যাপারে অপারগ ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে সবার মধ্যে সচেতনতা জন্ম নিচ্ছে। কিছু কিছু ভালো অভ্যাস আমাদের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে। বিদেশ থেকে আগতদের 14 দিনের জন্য quarantine এ রাখা হচ্ছে। যদিও এই quarantine নিয়ে ও সবার মধ্যে সংশয় রয়েছে।
ভ্যাকসিন (Vaccine) কতটা কার্যকরী:
এত দুশ্চিন্তা এবং আশঙ্কার মধ্যে ও সুখের খবর হল vaccine আমাদের নাগালের মধ্যে চলে এসেছে । প্রায় 80lakh vaccine ইতিমধ্যে আমাদের দেশে চলে এসেছে। ইতিমধ্যে প্রায় সব বয়সী মানুষকে vaccine প্রদান করা শুরু হয়েছে যা অত্যন্ত সুখকর এবং আশা জাগানিয়া সংবাদ।
করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ (Covid-19) প্রতিরোধের উপায়:
Covid-19 এর এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। আমাদের নিজেদের সামান্য সচেতনতা এবং কিছু সাবধানতাই পারে আমাদের সুরক্ষিত রাখতে। চলুন এবার দেখে নেই কিছু সাবধানতা:
- সবসময় musk পরিধান করতে হবে।
- বার বার যেকোনো সাবান যেমন:lifeboy, lux,ইত্যাদি বা hand sanitizer দিয়ে 5min পর পর হাত ধুতে হবে।
- কারো সঙ্গে হাত মেলানো যাবে না।
- ৩ফুট দূরত্ব মেনে চলতে হবে।
- খোলা জায়গায় হাঁচি কাশি দেওয়া যাবে না।
Covid-19 এ আক্রান্ত সারা বিশ্ব। আমাদের সামান্য সচেতনতাই পারে আবার আমাদেরকে আগের সেই সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে।