অনলাইন শপিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা ও প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে এবং শিকার হলে করনীয়
অনলাইন শপিং (Online Shopping) এর জনপ্রিয়তা সারাবিশ্বে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারন অনলাইন শপিং এর সুবিধা রয়েছে বহুবিধ। তবে এই অনলাইন শপিং কি? আমরা সকলেই জানি অনলাইনের মাধ্যমে শপিং বা কেনাকাটা করাকেই অনলাইন শপিং বলে। অনলাইন শপিং পদ্ধতি আবিষ্কার করেন কে? ১৯৭৯ সালে মাইকেল অল্ডরিচ অনলাইন শপিং পদ্ধতি আবিস্কার করেন।
বর্তামান সময়ে বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্লাটফর্ম হচ্ছে অ্যামাজন (Amazon), ফ্লিপকার্ট (Flipcart), ইবে (eBay), আলি এক্সপ্রেস (Ali express), দারাজ (Daraz) ইত্যাদি আরো অনেকে।অনলাইন শপিং এর সুবিধার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঘরে বসেই আপনি হাজারো পন্যের মধ্যে আপনার পছন্দসই পন্য খুজে ক্রয় করতে পারছেন। ছেলেদের এবং মেয়েদের অনলাইন শপিং করার জন্য হাজারো শপিং সাইট রয়েছে বিশ্বে। সেই সাথে এটি আমাদের বাংলাদেশেও প্রসারিত হচ্ছে! বর্তমান সময়ে আমাদের দেশেও নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের অনলাইন শপিং প্লাটফর্ম রয়েছে।
☞ ই কমার্স কি এর ইতিহাস এবং সুবিধা অসুবিধা
তবে এর যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি কতগুলো ঝুঁকি ও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অনলাইন শপিং এ প্রতারণা-র শিকার হওয়া। আজ আমরা জানবো অনলাইন শপিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এবং প্রতারনার শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে এবং প্রতারনার শিকার হলে কি করবেন এ সম্পর্কে!
প্রথমেই জেনে নেই অনলাইন শপিং এর সুবিধা গুলো! ঘরে বসে পছন্দের পণ্যটি হাজারো পণ্যের ভিতর খুঁজে নেওয়া এবং শপিং করতে মার্কেটে যাওয়ার ঝামেলা বিহীন সমাধান! এবং ঘরে বসেই পন্য হাতে পাবেন। যারা শপিং করতে বাইরে যাওকে বিরক্তি মনে করেন তাদের কাছে এর থেকে সুন্দর সমাধান আর কি হতে পারে!
যেসকল অসুবিধার শিকার হতে পারেন তাহলো, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সঠিক সময় পন্য ডেলিভারি না দেওয়া। এরপরে পন্যের গুনগত মান নিয়েও অনেক সময় ভোক্তাদের অসন্তোষ দেখা যায়। তাদের অনেকে অভিযোগ তারা সঠিক মানসম্পন্ন পন্য ডেলিভারি পান নাই। এছাড়াও অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে বর্তামান সময়ে আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা যায় অনেক নতুন এবং ছোটখাটো শপিং সাইট গুলো বিভিন্ন প্রতারনার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ডেলিভারি দিচ্ছে না। বা নামিদামী পন্যের প্রচারনা চালিয়ে মানহীন এবং ব্যবহার অনুপযোগী পন্য ডেলিভারি দেওয়া সহ কুরিয়ার সার্ভিসের বেখেয়ালির জন্য পন্যের ক্ষতিসাধন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে।
অনলাইন শপিং এ প্রতারণা-র শিকার হওয়ার থেকে বাঁচতে আমাদের যেসকল বিষয় মাথায় রাখা উচিত তা হলো, প্রথমেই আমাদের উচিত বিশ্বস্ত শপিং প্লাটফর্ম থেকে কেনাকাটা করা। এক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হওয়ার থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া পন্য অর্ডার করার ক্ষেত্রে ভালো ভাবে দেখে নেওয়া এবং কাস্টমার রিভিউ দেখে পন্য ক্রয় করা। সর্বোপরি আমাদের সেসকল সাইট থেকে পন্য ক্রয় করা উচিত যারা ক্যাশ অন ডেলিভারি (Cash on Delivery) সিস্টেমের মাধ্যমে পন্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এরপরে আমাদের উচিত ডেলিভারি পাওয়া পন্য ডেলিভারি ম্যান উপস্থিত থাকা অবস্থায় আনবক্সিং করে সব ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নেওয়া!
অনলাইন শপিং এ প্রতারণা-র শিকার হলে আমাদের করনীয় কি? অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে প্রতারনার বা মানহীন পন্য ডেলিভারি পেলে আমাদের সর্বপ্রথম উচিত যে প্লাটফর্ম হতে পন্যটি ক্রয় করা হয়ছে তাদের সাথে যোগাযোগ করা। অনেক সমস্যা দেখা যায় ভুল বশত পন্য অদলবদলের কারনে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি। এটি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান পেতে পারি। অথবা সমাধান না পেলে আমরা ভোক্তা অধিকার আইনের সহয়তা গ্রহন করতে পারি। এক্ষেত্রে পন্য ক্রয়ের সঠিক প্রমাণপত্র যোগার রাখতে হবে।
সর্বোপরি আমাদের সকলের উচিত বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম ব্যাবহার করা। চমকদার এবং লোভনীয় অফারের ফাঁদে পড়ে বেনামি মাধ্যম হতে শপিং না করাই শ্রেয়। এবং অপরিচিত শপিং প্লাটফর্ম হতে শপিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেম অবলম্বন করা ও যাদের থেকে পন্য ক্রয় করবেন তাদের কাস্টমার রিভিউ দেখে নেওয়া।