ভাবসম্প্রসারন: অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে।
ভাবসম্প্রসারন: অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে।
মূলভাব : সত্য ও ন্যায়ের পরাজয় ঘটিয়ে অন্যায় তখনই প্রাধান্য পায় যখন অন্যায়কারী অন্যায় করে এবং অন্যায় সহাকারী তা সহ্য করে অন্যায়ের প্রশ্রয় দেয়। অন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারী উভয়েই সমপরিমাণে দায়ী। তাই ন্যায়ের বিবেচনায় দু জনেই সমান শাস্তিযোগ্য অপরাধী।
সম্প্রসারিত ভাব : অন্যায়কারী নিঃসন্দেহে ঘৃণ্য ও পরিত্যাজ্য। অন্যায়কারীর ঘৃণা কর্ম সম্পাদনের মধ্যে যে অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতা বিরাজ করে তার ফলাফল অশান্তিকর, অকল্যাণকর ও ধ্বংসাত্মক। অন্যায়কারীর অন্যায়ের প্রতিবাদ না করা হলে সে নিজের কর্মকে স্বাভাবিক ও ন্যায় বলে বিবেচনা করে। কাজেই তার ভুল ভেঙে দেওয়া প্রয়োজন। কালে কালে যুগে যুগে মানুষ প্রয়োজনে জীবন বাজী রেখেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ না করা হলে অন্যায়কারী আর দশজনের চেয়ে পরাক্রমশালী মনে করে থাকে এবং সমাজের প্রতি যথেচ্ছ আচরণে অভ্যস্ত হয়। যার ফলে অন্যায় করার সাহস বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তাতে পৃথিবী থেকে ন্যায়বোধ ধীরে ধীরে তিরোহিত হতে থাকে। তাই যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না এবং নীরব উদাসীন দর্শকের ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে, প্রকারান্তরে সে অন্যায়কারীকে সমর্থন করে থাকে। কাজেই অন্যায় করা ও তা চোখ বুজে সহ্য করা অন্যায় করারই নামান্তর।
মন্তব্য : বিশ্বের মানব জীবনকে সুন্দর ও সুখকর রাখার জন্য অন্যায় থেকে দূরে থাকতে হবে। আর সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার তাগিদেই অন্যায়কে প্রতিহত করতে হবে। এ অন্যায় প্রতিরোধ করতে পারলেই জীবন সত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে।