ভাবসম্প্রসারণ: এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
ভাবসম্প্রসারণ: এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
ভাবসম্প্রসারণ : পৃথিবীতে সম্পদশালীর সম্পদের প্রতি তৃষ্ণা দর্নির্বার ও অসীম। তাদের চিরঅতৃপ্ত এ তৃষ্ণাকে চরিতার্থ করার প্রয়াসে তারা অনাহারী ও নিরন্ন মানুষের সম্পদ কেড়ে নিতেও কুণ্ঠিত হয় না।
আমাদের এ পৃথিবীতে বিচিত্র শ্রেণির মানুষের বাস। কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র, কেউ রাজা, আবার কেউ বা কাঙাল। পৃথিবীতে যারা প্রচুর সম্পদের মালিক, যাদের প্রচুর ধন আছে, তাদের সম্পদতৃষ্ণা কোনো দিন পরিতৃপ্ত হয় না। তারা যত পায়, তত চায়। এভাবে তারা নিজেদের আরও বেশি সম্পদশালী করে তোলে। তাদের নির্বিচারে সম্পদ সংগ্রহের ফলে গরিবের সম্পদে হাত পড়ে। তারা চায় ছলে বলে কৌশলে স্বীয় ঐশ্বর্য্যের ভাণ্ডার স্ফীত করতে। পক্ষান্তরে, যারা অভাবগ্রস্ত ও দীন দরিদ্র, সম্পদ সম্পর্কে তাদের মোহ বিত্তবানদের মতো সর্বগ্রাসী নয়। তারা দুবেলা দুমোঠো খেতে পেরেই পরিতৃপ্ত। দুর্দমনীয় লোভ, আকাঙ্ক্ষা ও ঐশ্বর্যের মোহ মানুষকে কীভাবে পাপাচারে লিপ্ত করে তোলে তার প্রমাণ ইতিহাসে অজস্র।
ক্ষমতালিপ্সু উদ্ধৃত সম্রাটগণ একের পর এক রাজ্য জয় করে দরিদ্রের শেষ সম্বলটুকুর দিকে দৃষ্টি দিতে কসুর করেন নি। একুশ শতকে এসেও আমরা দেখছি বিত্তবানদের আগ্রাসী মনোভাবের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। অর্থলিপ্সার ফলেই তারা সাধারণ মানুষকে শোষণ করছে, বঞ্চিত করছে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার অধিকার থেকে। পৃথিবীর একদিকে বুভুক্ষু মানুষের হাহাকার, অপরদিকে বিত্তবানদের বিত্তবাসনার প্রতিযোগিতা। একদিকে শোষণের স্টীমরোলার, অন্যদিকে শোষিত ও নিপীড়িতের বুকফাটা আর্তনাদ। এরকম অসম সমাজব্যবস্থা কারো কাম্য হতে পারে না।